জেলাটা বীরভূম। যে জেলার তৃণমূল সভাপতি কথা বলার ক্ষেত্রে খুব একটা রাখঢাক করেন না। সেই অনুব্রত মণ্ডলের বীরভূমে দাঁড়িয়েই তাঁর উদ্দেশে খোলাখুলি হুঙ্কার ছাড়লেন বিজেপি-র মহিলা মোর্চার সভানেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়।
গত ২১ অক্টোবর বীরভূমের লাভপুরের দ্বারকা গ্রামে একটি গাছ থেকে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছিল বুথ স্তরের বিজেপি কর্মী তাপস বাগদীর। তাঁর পরিবার এবং বিজেপি-র অভিযোগ ছিল, তৃণমূলের লোকেরাই খুন করে ঝুলিয়ে দিয়েছে তাপসকে। শাসক দলের মতে ওই ঘটনা ছিল বিজেপি-র গোষ্ঠী কোন্দলের ফল। সেই তাপস খুনের বিচারের দাবিতেই গতকাল থেকে লাভপুরে দু’দিনের অবস্থান বিক্ষোভের কর্মসূচি নিয়েছিল বিজেপি। তাতে যোগ দিয়েই মঙ্গলবার রণংদেহি মেজাজে পাওয়া গেল লকেটকে।
এ দিনের সভা থেকে লকেট বলেন, “যে, যে ভাষা বোঝে, তাকে সেই ভাষাতেই শিক্ষা দিতে হবে। আগামী দিনে এ ভাবে হবে না। ওর জিভ টেনে ছিঁড়ে নিতে হবে। ভদ্র লোকের ভাষা সে জানে না। সে বলতেও জানে না। সে কানে শুনতেও জানে না।’ গত কয়েকমাস ধরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ শাসক দলের নেতারা অভিযোগ করছেন বিজেপি ঝাড়খণ্ড থেকে লোক ঢোকাচ্ছে। এ দিনের সভা থেকে লকেট বলেন, “এ বার বোঝাবুঝির পালা এসেছে। প্রতিশোধের পালা এসেছে। অনেক ভদ্র লোক হয়েছি। তবে আর নয়। কথায় কথায় ঝাড়খণ্ড নিয়ে চলে আসে। এতই যখন ঝাড়খণ্ড প্রীতি, এ বার সত্যি সত্যি ঝাড়খণ্ড থেকে লোক এনে দাওয়াই দেওয়া শুরু হবে।”
প্রসঙ্গত, বিজেপি কর্মীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের আগের দিনই গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছিল বীরভূমের খয়রাশোলের ব্লক সভাপতি দীপক ঘোষের। তৃণমূল অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি-র দিকে। পাল্টা বিজেপি-র জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় বলেছিলেন, কয়লা খাদানের বখরা নিয়ে শাসকের গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের ফলেই খুন হয়েছেন দীপক ঘোষ। রাজনৈতিক উত্তেজনা তুঙ্গে উঠেছিল লালমাটির জেলায়।
এ দিন লকেটের বক্তব্য নিয়ে অবশ্য অনুব্রত মণ্ডলের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে শাসক দলের এক মুখপাত্র বলেন, “উনি সিনেমা থেকে রাজনীতিতে এসেছেন। উনি বীরভূম জেলাকেও চেনেন না। বীরভূম জেলার মানুষকেও চেনেন না। লকেটদেবী যা বলেছেন তা সবটাই বলার জন্য বলা।”
Be the first to comment