অর্ণব গরাইঃ
সকাল থেকে খুব চিন্তিত শুভম, আজ মনে হচ্ছে আর চাকরিটা থাকবেনা। কি করবো ধুর কিছুই মাথায় ঢুকছেনা। কানাডা থেকে এত বড় একজন ইনভেষ্টর আসছে, ইংলিশে কথা বলতে হবে । শুভম কি ভাবে বলবে, বাঘা লোকের সামনে পড়লে বাংলা বলতেই তোতলে ওঠে তার উপর ইংলিশ। কি ভাবে বসবে, কিভাবে টাই বাঁধবে, কি করে প্রথম উইশ করবে সব আসন কায়দা আয়নার সামনে অভ্যাস করতে লাগলো। পৌষ মাসের শীতেও ঘেমে জল শুভম। সম্পা কি একটা বলতে এলো খেঁকিয়ে উঠলো শুভম। সেও বেচারা সকাল থেকে স্বামীর রকম সকম দেখে অবাক। একবার তো মাকে ফোন করে বলেই ফেললো, জানো মা ওর বোধ হয় মাথা খারাপ হয়েছে। কেমন জানি করছে সকাল থেকে।
ঠিক ৯.৩০ শুভম অফিসে পৌঁছে প্রথমেই বসের চেম্বারে, বস এই দায়িত্বটা অন্য কাউকে দিলে মনে হয় ভালো হবে। না হবেনা আমি কাল কেউ বলেছি, মনে রেখো যদি ইনভেষ্টমেন্ট না আসে তাহলে তুমিও আর এসোনা।
বেলা ১২ টায় এয়ারপোর্ট পৌঁছে গেল শুভম, সাড়ে ১২টায় নামবেন মি. পি. ডট। সোজা তাজে লাঞ্চ তারপর ঘন্টা খানেকের মিটিং আর শুভমের ভাগ্য নির্ধারণ । পুরো একশো পঁচিশ কোটির ইনভেষ্টমেন্ট।
গুড আফটারনুন স্যার, মাই সেল্ফ শুভম স্যানিয়াল ফর্ম আরওবি। গুড আফটার নুন। ম্যা আই আস্ক ইউ সামথিং মি. স্য্যনিয়াল? ইয়েস স্য্যর হোয়াই নট। আর ইউ বেঙ্গলী ওর… ইয়েস স্যার , বাট স্যার ইস দেয়ার এনি প্রোবলেম।
ধুর মশাই তাহলে বাংলায় কথা বলুন, এতদিন পর কলকাতায় এলাম শুধুমাত্র বাংলার ভালোবাসায় আর আপনি ইংরেজিতে কথা বলছেন। জানেন ওখানে থাকতে থাকতে আমি এতো মিষ্টি ভাষা টা প্রায় ভুলেই গেছি। যেদিন আপনাদের সাথে ডিলের কথা হলো সেদিনই ঠিক করেছিলাম আমিই আসবো। ঘুরে যাবো আমার সোনার বাংলাই। আর আপনি মশাই কি নাম বললেন আপনার শুভম স্যানিয়াল না কি, না স্যার স্যান্যাল তো তাই ইংরাজি তে স্যানিয়াল বললাম। স্যার আপনার পুরো নাম টা কি? কেন আপনি জানেন না, আপনি জানেন না কার সাথে আপনার দেখা করতে হবে। না মানে বলছিলাম জানি, মি. পি ডট, আমি তো ভেবেছিলাম আপনি কানা
ডিয়ান কেউ কিন্তু এখন দেখছি পাকা বাঙালী । কেন কি দেখে আপনার সন্দেহ হলো মি. স্যান্যাল। স্য্যর আপনার নাম, পি .ডট।
হো হো করে হেসে উঠলেন মি. ডট। বললেন আরে আমি প্রদ্যুৎ দত্ত, সাহেব রা, মানে অবাঙালীরা আমাকে ডট বানিয়ে দিয়েছেন।
Be the first to comment