ইসলামপুরের দাড়িভিটা স্কুলে হিংসার ঘটনায় দুই ছাত্রের মৃত্যুর দায় বিজেপি এবং আরএসসের উপরেই চাপালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শনিবার বিকেলে ইতালির মিলানে সাংবাদিকদের মমতা বলেন, “সরকারের কাছে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট রয়েছে। আমার কাছে খবর রয়েছে পুলিশ গুলি চালায়নি। মুখে গামছা বেঁধে এসে বহিরাগতরা স্কুলে এসেছিল। বিজেপি-আরএসএস ওই গুণ্ডাদের নিয়ে এসেছিল। ওরাই হামলা চালিয়েছে। এই হত্যার দায় ওদেরই নিতে হবে।”
তবে মুখ্যমন্ত্রীর এই অভিযোগকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ করেছে আরএসএস। মুখ্যমন্ত্রী এই অভিযোগ করার আগেই সঙ্ঘ পরিবারের নেতা জিষ্ণু বসু এ দিন সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, ইসলামপুরের ঘটনায় আরএসএস যে জড়িত তা প্রমাণ করতে হবে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। নইলে তাঁকে ইস্তফা দিতে হবে।
প্রসঙ্গত, ইসলামপুরে ছাত্র-পুলিশ সংঘর্ষের প্রথম দিনেই গুলির আঘাতে এক ছাত্রের মৃত্যু হয়। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সে দিনই অনেক রাতে তাঁর নাকতলার বাড়িতে সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পার্থবাবুও তখন দায় চাপিয়েছিলেন বহিরাগত তথা আরএসএসের উপরেই। বলেছিলেন, আরএসএস সঙ্ঘবদ্ধ ভাবে এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
কিন্তু পর দিন সকালে গুলিতে জখম আরেক ছাত্রের মৃত্যু হয় হাসপাতালে। ফলে নতুন করে তেতে ওঠে গোটা ইসলামপুর। নিহত ছাত্রের দেহ বিজেপি-র পতাকায় মুড়ে স্থানীয়রা বাড়িতে নিয়ে আসেন। এমনকী দুই ছাত্রের দেহ দাহ না করে তাদের মাটি চাপা দেওয়া হয়। পরিবারের তরফে দাবি করা হয়, পুলিশের গুলিতেই ওদের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার সিবিআই তদন্তও দাবি করেছে নিহতদের পরিবার।
সামগ্রিক পরিস্থিতিতে শাসক দলের নেতারাও বুঝতে পারছেন ইসলামপুর কাণ্ড নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে নেতিবাচক বাতাবরণ তৈরি হচ্ছে।
ফলে শেষমেশ পরিস্থিতি সামলাতে শনিবার ইতালির মিলান শহরে বসেই মুখ খুলতে হয় মুখ্যমন্ত্রীকে। মমতা এ দিন অভিযোগ করে বলেন, শিল্পের জন্য বিশেষ কাছে বিদেশে এসেছি। বেড়াতে আসেনি। কিন্তু কলকাতার বাইরে গেলেই দেখি বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস ইচ্ছা করে অশান্তি তৈরি করে। এটা চক্রান্ত। গোটা ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করবে পুলিশ।
বিজেপি-কে হুঁশিয়ার করে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, অন্য রাজ্যের সঙ্গে বাংলাকে গুলিয়ে ফেললে ওরা ভুল করবে। দাঙ্গার রাজনীতি বাংলায় চলবে না। মানুষ খুনের রাজনীতি বরদাস্ত করা হবে না।
Be the first to comment