পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেওয়ার দিনই ইমরান খান বলেছিলেন, ভারত যদি শান্তির লক্ষে এক পা এগয়, তিনি এগোবেন দু’পা। তিনি ক্ষমতায় আসার পরে অতিক্রান্ত হয়েছে ১০০ দিনের বেশি। কিন্তু আমেরিকা জানিয়ে দিল, ইসলামাবাদের পলিসি কিছুই বদলায়নি। তারা আগের মতোই তালিবানকে ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে।
মঙ্গলবারই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, আফগানিস্তানে শান্তি ফেরাতে ইমরান খানের সহযোগিতা চাই। বুধবার আমেরিকার মেরিন কোরের লেফটেন্যান্ট জেনারেল কেনেথ ম্যাকেঞ্জি সেনেটের আর্মড সার্ভিসেস কমিটিতে বলেন, আফগানিস্তানে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে পাকিস্তানের ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আফগান সরকারের সঙ্গে তালিবানকে আলোচনায় বসাতে ইসলামাবাদ বিশেষ ভূমিকা নিতে পারে। তবে এখন তারা তালিবানকে আলোচনায় বসানোর জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছে না। আমরা দেখছি, তালিবানকে শান্তিপ্রক্রিয়ায় শামিল করার বদলে আগের মতোই তাদের ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে।
ম্যাকেঞ্জি জানান, আফগানিস্তানের শান্তি প্রক্রিয়ায় সাহায্য করার জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চিঠি লিখেছেন ইমরানকে। হোয়াইট হাউসের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, প্রসিডেন্ট চিঠিতে লিখেছেন, পাকিস্তান চাইলে তালিবানকে আশ্রয় দেওয়া বন্ধ করতে পারে।
একইসঙ্গে চিঠিতে বলা হয়েছে, আমেরিকার সঙ্গে যদি সম্পর্ক রাখতে হয়, তাহলে পাকিস্তানকে আফগান শান্তি প্রক্রিয়ায় সাহায্য করতে হবে। এদিন ম্যাকেঞ্জি বলেন, দক্ষিণ এশিয়া নিয়ে পাকিস্তান বড় বড় কথা বলে বটে কিন্তু বাস্তবে আফগানিস্তান সীমান্তে জঙ্গিরা এখনও সক্রিয়। পাকিস্তান দেশের অভ্যন্তরে কয়েকটি জঙ্গি সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। কিন্তু তাদের আরও বড় অভিযান চালাতে হবে। দেশের মধ্যে যাতে জঙ্গিরা ঘাঁটি না বানাতে পারে, স্বাধীনভাবে ঘোরাফেরা না করতে পারে, সেজন্য চেষ্টা করতে হবে তাদের।
পাকিস্তান সত্যিই জঙ্গিদের মদত দেওয়া বন্ধ করবে কিনা, সে ব্যাপারে খুব বেশি আশা প্রকাশ করেননি ম্যাকেঞ্জি। তিনি বলেন, অতীতে পাকিস্তানের কাজকর্ম দেখে আমরা হতাশ হয়েছি। আমেরিকা ও পাকিস্তান, উভয়ের স্বার্থেই দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি প্রয়োজন। আমরা আগামী দিনে পাকিস্তানের নেতাদের বোঝাব, কীভাবে আমরা তা অর্জন করতে পারি।
ভারত থেকে আগে বহুবার বলা হয়েছে, পাকিস্তানে জঙ্গিদের ঘাঁটি রয়েছে। জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দিয়ে পাঠানো হচ্ছে কাশ্মীরে। ইমরান খান ঘন ঘন ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বের কথা বলেন বটে, কিন্তু তাঁর আমলেও সন্ত্রাসবাদীদের মদত দেওয়া বন্ধ হয়নি। সেজন্য পাকিস্তানের সঙ্গে বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ে বৈঠক বন্ধ রাখা হয়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তানের দাবি, ভারত অনমনীয় মনোভাব দেখাচ্ছে। কিন্তু এবার ভারতের সুরেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছেন আমেরিকার সেনাকর্তাও।
Be the first to comment