রোজদিন ডেস্ক :- সল্টলেকে দুটি বাসের রেষারেষিতে স্কুল পড়ুয়ার মৃত্যুতে উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার সুদূর পাহাড় থেকে এই দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তিনি টেলিফোন করেন রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তীকে। অবিলম্বে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রীকে নির্দেশ দেন। এর পরেই বৃহস্পতিবার দুর্ঘটনা সংক্রান্ত বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক ডেকেছেন স্নেহাশিস। ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন রাজ্যের পরিবহণ দফতরের আধিকারিকেরা।
সম্প্রতি কলকাতায় একের পর এক পথ দুর্ঘটনায় স্কুল পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী। সল্টলেকে বাসের রেষারেষিতে যে স্কুল পড়ুয়ার মৃত্যু হয়, তার বাড়ি গুলের মাঠ, ক্যানেল রোডে বস্তিতে। কেষ্টপুরে বৈশদেবী একাডেমী স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিল সে।
সূত্রের খবর, এদিন দুপুরে পাহাড়ের উন্নয়নে জিটিএ বৈঠকের মধ্যেই বাসের রেষারেষিতে স্কুলছাত্রের মৃত্যুর খবর পেয়ে সেখান থেকেই টেলিফোনে পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীকে ফোন করেন মমতা।
ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী এতটাই ক্ষুব্ধ যে অবিলম্বে বাসের রেষারেষি বন্ধ না হলে আইন এনে বেপরোয়া চালকদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় খুনের মামলা রুজু করার প্রস্তাবও দিয়েছেন পরিবহণ মন্ত্রীকে।
প্রসঙ্গত, সল্টলেক ২ নম্বর গেটের সামনে পথ দুর্ঘটনা, প্রাণ গেল চতুর্থ শ্রেণীর এক ছাত্রের। এক স্কুল পড়ুয়া সহ আহত হয় মোট দু ‘জন। নিহত পড়ুয়ার মাও আহত হন। এর আগে বেহালা ও বাঁশদ্রোণীতে পরপর দুটি পথ দুর্ঘটনায় দুজন ছাত্রের মৃত্যু হয়েছিল। মঙ্গলবার দুপুরে সল্টলেকের ২ নম্বর গেটের সামনে এই পথ দুর্ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা মৃতদেহ আটকে রেখে রাস্তা অবরোধ করে। পরে পুলিশ এসে অবরোধ আলোচনার মাধ্যমে সরিয়ে দেয়। দুটি বাস আটক করেছে পুলিশ। কিন্তু পরে ফের হাডকো ক্রসিং এ অবরোধ করে স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিশ সূত্রে খবর, সল্টলেক লাগোয়া বেসরকারি স্কুলের পড়ুয়াদেরকে নিয়ে স্কুটিতে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন পড়ুয়া ছাত্রকে নিয়ে তার মা। সেই সময় সল্টলেক ২ নম্বর গেটের দিক থেকে ২১৫ এ রুটের দুটি বাস রেষারেষি করছিল। বাস দুটি উল্টোডাঙার দিকে যাচ্ছিল। এই সময় ঘটে এই দুর্ঘটনাটি।
জানা গিয়েছে, সেই সময় ওই দুটি বাস রেষারেষি করতে গিয়ে স্কুটিকে ধাক্কা মারে। ফলে গুরুতর আহত হন তাঁরা। আহত মা সহ তাঁদেরকে তড়িঘড়ি নিয়ে যাওয়া হয় উল্টোডাঙ্গা অবস্থিত একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে এক পড়ুয়ার অবনতি হওয়ার ফলে তাকে রেফার করা হয় আরজিকর হাসপাতালে। সেখান থেকে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় নীলরতন সরকার হাসপাতালে। এরপর সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় শিশু হাসপাতালে। কিন্তু সেখানেই ওই চতুর্থ শ্রেণীর পড়ুয়ার মৃত্যু হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ যেখানে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে সেখানে মঙ্গলবার দুপুরে ট্রাফিক পুলিশ ছিল না। ঘাতক বাসের এক যাত্রী জানান তিনি বাস যখন দ্রুত গতিতে চালানো হচ্ছিল বারবার কন্ডাক্টারকে আসতে চালানোর জন্য অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু তার কথায় কোন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। একই রুটের অপর একটি বাস পিছনে চলে এলে গতি বাড়িয়ে দেয় আরো। আর তাতেই সল্টলেক দু’নম্বর গেটের সামনে ঘটে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। অকালে প্রাণ যায় চতুর্থ শ্রেণীর এক ছাত্রের।
Be the first to comment