
রোজদিন ডেস্ক, কলকাতা:- মধ্যমগ্রাম খুনের ঘটনায় পুলিশের হাতে উঠে এল নতুন তথ্য। মঙ্গলবার রাতেই অভিযুক্ত মেয়েকে নিয়ে তাদের বাড়িতে যায় পুলিশ। সেখানে গোটা ঘটনার পুনর্নির্মাণ করে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যে ধারাল অস্ত্র দিয়ে মৃতদেহকে কাটা হয়েছিল তা রিজেন্ট পার্ক এলাকার পুকুরে ফেলা হয়েছিল বলেই খবর মিলেছে। মৃতদেহ ভরার জন্য যে ব্যাগ কেনা হয় সেটা কেনা হয়েছিল বড়বাজার থেকে। এই ঘটনা ঘটানোর পর মা মেয়ে মিলে ২৫ হাজার টাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে তোলে। এখানেই শেষ নয়, দুজনে মিলে পিন কোড চেঞ্জ করে এবং ৫০ হাজার টাকা গহনার অর্ডার পর্যন্ত দেয়।
সূত্রের খবর সাময়িক রাগ এবং ঝগড়ার বসেই এমন ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদ থেকে উঠে এসেছে। মা ও মেয়ে অপরাধ করার পর বাগবাজার ঘাটে মৃতদেহ নিয়ে আসার জন্য ট্রেনের টিকিট নাকি কেটেছিল বলে জানা গিয়েছে। যদিও এবিষয়ে পুলিশি তদন্তের কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।
যে ট্যাক্সি করে তারা এসেছিল পুলিশ সেই ট্যাক্সি চালককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে নর্থ পোর্ট থানা। বুধবার দুই অপরাধীকেই ব্যাঙ্কশাল কোর্টে তোলা হয়েছিল। অভিযুক্ত মা আরতী ঘোষের মেয়ে ফাল্গুনী ঘোষের বিয়ে হয়েছিল অসমে। তবে স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে অসম থেকে মেয়ে ফাল্গুনী ঘোষ চলে আসে মায়ের কাছে। এরপর তারা দুজনে একসঙ্গেই থাকত। বুধবার ব্যাঙ্কশাল কোর্টে তাদের ১ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। বৃহস্পতিবার বারাসাত এসিজেএম আদালতে ফের দুজনকে পেশ করা হবে। এই ঘটনার তদন্ত করবে মধ্যমগ্রাম থানাই, স্পষ্ট জানিয়ে দিল ব্যাঙ্কশাল কোর্ট।
প্রসঙ্গত, কুমোরটুলি ঘাটে দুই মহিলা ভারী একটি ট্রলি ব্যাগ নিয়ে গঙ্গার কাছে যাচ্ছিলেন। যা দেখে স্থানীয়দের সন্দেহ জাগে। এক মহিলা প্রশ্ন করতেই পাল্টা উত্তর আসে ব্যাগে তাঁদের কুকুরের দেহ রয়েছে, সেই দেহই গঙ্গায় ফেলতে এসেছেন তাঁরা। কথায় অসঙ্গতি মেলায় আশেপাশের লোকজন এসে নীল রঙের ওই ট্রলি ব্যাগ খুলতেই ভেতরে দেখা যায় টুকরো টুকরো দেহ। কাছেই সুতানুটি থানার আউট পোস্টে খবর দেওয়া হলে পুলিশ এসে দুই মহিলাকে ভ্যানে তোলে। বাজেয়াপ্ত করা হয় নীল ট্রলিব্যাগ।
প্রথমে দুই মহিলা মানতে না চাইলেও ব্যাগ খুলতেই সবটা স্পষ্ট হয়ে যায়। উদ্ধার হয় এক মহিলার টুকরো টুকরো করা দেহ। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। থানায় নিয়ে গিয়ে ওই মহিলাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে জানা যায় ধৃতরা হলেন ফাল্গুনী ঘোষ ও আরতি ঘোষ। সম্পর্কে ফাল্গুনীর মা আরতী। পুলিশ সূত্রে খবর, যে মহিলার দেহ মিলেছে তিনি সম্পর্কে ফাল্গুনী ঘোষের পিসিশাশুড়ি। এরপরই ফাল্গুনী ও আরতিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁদের এই কাজে কারা সহায়তা করেছে। জিজ্ঞাসাবাদ করতেই উঠে আসে আটক দুই ভ্যান ও এক ট্যাক্সি চালকের নাম।
Be the first to comment