বড় সিদ্ধান্ত নিল মহারাষ্ট্র প্রশাসন। রাজ্যজুড়ে আগামী ১৫ দিনের জন্য জারি করা হল কার্ফু। করোনা সংক্রমণ রুখতে বুধবার রাত ৮টা থেকে ১৪৪ ধারা জারি করা হচ্ছে গোটা মহারাষ্ট্রে। লকডাউন না হলেও এমনই কড়া পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ রাজ্যবাসীর উদ্দেশে একটি বার্তায় তিনি বলেন, ‘গত বছরের থেকেও ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে রাজ্যজুড়ে। হাসপাতালগুলিতে শয্যা বাড়ন্ত। ওষুধপত্র অমিল। আর সময় নষ্ট করা সম্ভব নয়। এবার সমস্ত পরিকাঠামো ভেঙে পড়বে।’
এদিনের ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে জানান, আগামী ১৫ দিনের জন্য মহারাষ্ট্র জুড়ে জারি থাকবে ১৪৪ ধারা। বুধবার রাত ৮টা থেকে কার্ফু শুরু হবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ছাড়া সমস্ত দোকানপাট বন্ধ থাকবে। সকাল ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দোকান।
যান চলাচল স্বাভাবিক রাখা হলেও তা কেবলমাত্র এমারজেন্সি কারণেই ব্যবহার করা যাবে। সকাল ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত রাস্তার ধারের খাবারের দোকানগুলি খোলা থাকলেও, সেখানে দাঁড়িয়ে খাবার খাওয়া যাবে না। গুরুত্বপূর্ণ শিল্প কারখানা খোলা রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন উদ্ধব ঠাকরে। পাশাপাশি, রাজ্যের সমস্ত দরিদ্র মানুষের পরিবারে ৩ কেজি গম ও ২ কেজি চাল পৌঁছে দেবে সরকার।
উল্লেখ্য, মহারাষ্ট্রে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬০ হাজার ২১২ জন। পরিসংখ্যান ক্রমশই আতঙ্ক সৃষ্টি করছে সে রাজ্যে। মুম্বই এবং পুনে শহরের অধিকাংশ হাসপাতালের সমস্ত শয্যা ভর্তি। নাগপুরের মর্গে কোভিড রোগীর মৃতদেহ উপচে পড়ছে। বিগত কয়েকদিন ধরেই মহারাষ্ট্রের টাস্ক ফোর্স, চিকিৎসক ও মন্ত্রীদের সঙ্গে অনলাইন বৈঠক সেরেছেন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। সেখানেই টাস্ক ফোর্স ১৫ দিনের লকডাউন ঘোষণার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। সে ক্ষেত্রে লকডাউন শব্দটির ব্যবহার না করলেও বিশেষজ্ঞদের মতে এটি কার্যত লকডাউনেরই সমান।
যেভাবে রেকর্ড সংখ্যক মানুষ প্রতিদিন করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন, তাতে মহারাষ্ট্রের হাসপাতালে বেডের সংখ্যাতেও ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। পর্যাপ্ত অক্সিজেনেরও অভাবও চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। সে রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেশ তোপে জানিয়েছিলেন, রাজ্যের প্রতিটি জেলায় যাতে অক্সিজেন প্লান্ট তৈরি করা যায়, সেই ব্যাপারেও সরকার ভাবছে। আকাশপথে অক্সিজেন আনানোর জন্য কেন্দ্রের কাছে আবেদন করেছেন উদ্ধব ঠাকরে।
Be the first to comment