ট্রেনের কামরায় বেঁধে রেখে বাবা ও ছেলেকে বেধড়ক পেটালেন ট্রেনের যাত্রীরা। শুধু যাত্রীরা নয়, চোর অপবাদ দিয়ে দু’জনকে হাটুরে মার দিলেন টিকিট পরীক্ষক ও রেল পুলিশও। প্রায় ৪০ ঘণ্টা ধরে চলল এই নির্মম অত্যাচার। গুরুতর জখম অবস্থায় দু’জনকে উদ্ধার করে মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনাটা ঘটেছে তিনসুকিয়া এক্সপ্রেসের সাধারণ কামরায়। বেঙ্গালুরু থেকে রওনা দিয়েছিল ট্রেনটি। সেখান থেকেই ট্রেনে উঠেছিল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তপন থানা এলাকার বাসিন্দা নেপাল লোহার ও তাঁর ছেলে জীবন লোহার। বেঙ্গালুরু থেকে মালদা পর্যন্ত তাঁদের উপর এই অত্যাচার চালান যাত্রীরা।
পুলিশ জানিয়েছে, মাস দুয়েক আগে ছেলেকে নিয়ে শ্রমিকের কাজ করতে বেঙ্গালুরু গিয়েছিলেন নেপালবাবু। গত মঙ্গলবার বাড়ি ফেরার জন্য বেঙ্গালুরু থেকে তিনসুকিয়া এক্সপ্রেসে চাপেন তাঁরা। সঙ্গে ছিলেন সুখেন লোহার নামে তাঁদের গ্রামেরই এক বাসিন্দা। ট্রেনের কামড়ায় খুব ভিড় থাকার জন্য ছেলেক নিয়ে উপরের বাঙ্কে চাপেন নেপালবাবু। সেই সময় তাঁর হাত ফস্কে মোবাইল ফোন নিচে পড়ে যায়। ফোন খুঁজতে নিচে নেমে তিনি খেয়াল করেন তাঁর মানিব্যাগটিও খোয়া গিয়েছে। ব্যাগে ছিল রোজগারের ছ’হাজার টাকা। তিনি যখন নিজের ব্যাগ খুঁজছিলেন, তাঁর ছেলে জানায় যে তার পকেটে থাকা প্রায় হাজার দশেক টাকাও খোয়া গেছে।
টাকা খোঁজার মাঝেই ট্রেনের কয়েক জন যুবক তাঁদেরই চোর অপবাদ দেয়। পুলিশ জানিয়েছে, ওই যুবকেরা অসমের বাসিন্দা। তারা নেপালবাবু ও তাঁর ছেলেকে চোর হিসেবে চিহ্নিত করে। উস্কে দেয় ট্রেনের অন্যান্য যাত্রীদেরও। এর পর সবাই মিলে চড়াও হন দু’জনের উপর। বেঙ্গালুরু থেকে মালদা পর্যন্ত দফায় দফায় তাঁদের উপর অত্যাচার চালানো হয়।
মালদা স্টেশন থেকে তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায় মালদা জিআরপি। সেই সঙ্গে আটক করা হয় অসমের তিন যুবককে।
Be the first to comment