তখন নিউ আলিপুরের দুর্গাপুর সেতুর উপর উঠবে কনভয় ৷ চালককে দ্রুত গাড়ি থামানোর নির্দেশ দিলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর এহেন নির্দেশ মুহূর্তে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল কনভয় পরিচালনার দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্তাদের কাছেও ৷ কিন্তু, ওয়াকিটকিতে নিজেদের মধ্যে কথা শুরু করবেন, তার আগেই গাড়ি থামিয়ে নেমে পড়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ৷
তখনও বুঝে উঠতে পারেননি কেউই। নিরাপত্তারক্ষীরা কেবল খেয়াল করেছিলেন গাড়ি থেকে নেমে হাঁটতে শুরু করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ পিছনে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্তারা ৷ রয়েছেন রাজ্যের এক মন্ত্রীও ৷ কিছু পথ হাঁটার পরই সকলে বুঝতে পারলেন ঠিক কী ঘটেছে ৷
বুধবার ছিল চতুর্থী ৷ বলা ভালো পুজো শুরু হয়ে গেছে ৷ তার উপর গান্ধী জয়ন্তী থাকায় ছুটির দিন ৷ একটুও সময় নষ্ট করতে চান না কেউই ৷ আর পাঁচ জনের মতো এ দিন কলকাতায় ঠাকুর দেখতে এসেছিলেন শুভ্রা দাস। হাওড়ার দাশনগরের বাসিন্দা ওই যুবতির সঙ্গে ছিলেন তাঁর বন্ধুরাও ৷ ঠাকুর দেখে বাসে উঠতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে গেছিলেন শুভ্রা। আহত অবস্থায় পড়েছিলেন রাস্তার উপর ৷ গাড়ি করে যাওয়ার সময় এটা নজরে পড়ে যায় মমতার ৷ দ্রুত চালককে নির্দেশ দেন গাড়ি থামানোর ৷
আহত ওই যুবতিকে দ্রুত হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ সেই মতো কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় শুভ্রাকে ৷ ঠিকানা নিয়ে যোগাযোগ করা হয় দাশনগরে তাঁর বাড়িতেও ৷ পরে রাজ্যের এক মন্ত্রী জানাচ্ছেন, দিদি গাড়িতে সব সময় সামনের আসনেই বসেন ৷ যাতে খুব সহজে সামনের সব কিছু দেখতে পারেন সে জন্য বরাবরই চালকের পাশের আসনটি পছন্দ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ৷
মন্ত্রীর কথায়, তখন সুরচি সংঘের পুজো উদ্বোধন করে ফিরছিলেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ আমিও ছিলাম গাড়িতে ৷ ঘড়িতে পাঁচটা-সাড়ে পাঁচটা হবে ৷ হঠাৎ দেখি দিদি চালককে বললেন গাড়ি থামাতে ৷ কিছু বুঝে উঠার আগেই গাড়ি থেকে নেমে গেলেন তিনি ৷ মমতার পিছু পিছু গাড়ি থেকে নেমেছিলেন তিনিও ৷ দু-পা হাঁটতেই নজরে পড়ে ওই যুবতি পড়ে আছেন রাস্তায়, আহত অবস্থায়, বলছেন ওই মন্ত্রী ৷
আর মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে তাঁদের মেয়েটার চিকিৎসার ব্যবস্থা করলেন, তাতে আবেগ চেপে রাখতে পারছে না হাওড়ার দাস পরিবার ৷ সকলের একটাই কথা, মুখ্যমন্ত্রীর নজরে না পড়লে আজ যে কী হত জানি না ৷
Be the first to comment