নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ও এনআরসির প্রতিবাদে এবার গণ আন্দোলনে নামছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার, সোমবার, মঙ্গলবার ও বুধবার, টানা ৪ দিন কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। দিঘায় এদিন মুখ্যমন্ত্রী ফের বলেন,‘‘নো এনআরসি, নো ক্যাব”। আইন পাস হলেও আমাদের সরকার তা কার্যকর করবে না। সকলকে বলছি, ধর্ম-বর্ণ-জাতি নির্বিশেষে সকলে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে প্রতিবাদ করুন। সব রাজ্যে গণ আন্দোলন করুন। বাংলাতেও গণ আন্দোলন গড়ে তুলুন।
দিঘায় শুক্রবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আগামী সোমবার আমরা মিছিল করব। আম্বেদকরের মূর্তির সামনে দুপুর ১টায় জমায়েত করব। এরপর গান্ধী মূর্তির পাদদেশ থেকে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি পর্যন্ত মিছিল করব। মঙ্গলবার দক্ষিণ কলকাতায় মিছিল করা হবে। সেদিন যাদবপুর ৮বি থেকে ১টায় মিছিল শুরু হবে। মিছিল যাবে গান্ধী মূর্তির পাদদেশ পর্যন্ত। বুধবারও আমরা মিছিল করব। কোথায় করবো সেটা পরে জানাব। আগামী রবিবার জেলায় জেলায় সব ধর্ম-বর্ণের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল করবে তৃণমূল। ব্লকে ব্লকে মিছিল করা হবে।
পাশাপাশি এদিন ক্যাব-এনআরসি ইস্যুতে মোদী সরকারকে বিঁধে মমতা বলেন, ক্যাব-এনআরসি নিয়ে অনেক বুঝিয়েছি। বেড়ালের গলায় ঘণ্টা বাজিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। কতবার বলেছি, আগুন নিয়ে খেলতে যেয়ো না, শোনেনি। আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা-সহ সব রাজ্যের আলাদা আবেগ রয়েছে। গায়ের জোরে বলছে ক্যাব-এনআরসি করবে। আমরা করতে দেব না। যে বিজেপি করবে, তাকেই শুধু নাগরিকত্ব দেওয়া হবে? বাকিদের না? আসামে আগুন জ্বলছে দেখুন, কী অত্যাচার চলছে! বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক কোথায় দাঁড়িয়ে আজ! বিজেপিকে আক্রমণ করে মমতা আরও বলেন, বিজেপি এখন ওয়াশিং মেশিন। বিজেপিতে গেলে সাফ, না হলে জেলে।
বিজেপিকে নিশানা করে এদিন মমতা আরও বলেন, সাম্প্রদায়িকতার রং নিয়ে খেলছে বিজেপি। দেশজুড়ে অস্থিরতা চলছে। দেশের অর্থনীতি কালো মেঘে ছেয়ে গিয়েছে। বেকারত্ব বাড়ছে, দারিদ্রতা বাড়ছে। একটা সরকারের কাজ মানুষের উন্নয়ন করা। আমরা দেনা শোধ করেও সামাজিক কর্মসূচী যাতে ভাল করে চলে, সেদিকে খেয়াল রাখি। আমরা কাজ দিয়ে তা প্রমাণ করেছি।
এছাড়া এদিন আবারও, তফশিলি জাতি ও উপজাতি বিলে রাজ্যপালের স্বাক্ষর না করা নিয়ে ফের একবার রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে আক্রমণ করেন মমতা। রাজ্যপাল জানতে চাইছেন, তফশিলি জাতি ও উপজাতি কমিশনর টাকা আসবে কোথা থেকে। মমতা সরাসরি বলেন, এটা সরকারের দায়িত্ব। এরপরই ফের ক্যাব প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ক্যাপ পাশ হয়েছে সংসদে, কিন্তু তা বলবৎ করার দায়িত্ব রাজ্যের হাতে। বাংলার সরকার রাজ্যে ক্যাব বলবৎ করতে দেবে না, চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন মমতা।
Be the first to comment