রাজ্যের বিষয়ে অহেতুক হস্তক্ষেপ বন্ধ করুক কেন্দ্র। নীতি আয়োগের বৈঠকে সোজাসুজি এমনটাই বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে অর্থ কমিশনের নয়া নীতি নিয়েও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি। তুলেছেন রাজ্যের ঋণ মকুবের দাবিও।
প্রথমে ঠিক ছিল যাবেন না। তবে দিন পরিবর্তন করায় শেষমেশ সিদ্ধান্ত বদলে নীতি আয়োগের বৈঠকে হাজির হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন দিল্লির বৈঠকে কেন্দ্রের একাধিক নীতি নিয়ে সুর চড়িয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের বিষয়ে অকারণ হস্তক্ষেপ করা বন্ধ করুক কেন্দ্র। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়,”রাজ্যের দিকে আমার মনে অযথা হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। যু্ক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো মেনে চলা হোক। নীতি আয়োগের কোনও কাজই নেই।”
এখানেই থেমে থাকেননি মমতা। তুলোধনা করেছেন অর্থ কমিশনের নয়া নীতিকেও। নীতি আয়োগের বৈঠকে উঠে আসে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বিষয়ও। একাধিক প্রকল্পে কেন বরাদ্দ কমাচ্ছে দিল্লি? সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে তুললেন রাজ্যের ঋণ মকুবের দাবিও। মমতা বলেন, ”শুনলাম অর্থ কমিশন নিয়ম করছে যে সব জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রেখেছে, তাদের অর্থ সাহায্য কমিয়ে দেওয়া হবে। মানে আমরা ভাল কাজ করে বঞ্চিত হব! আমরা ২ লক্ষ ৩০ হাজার কোটি টাকা দেনা শোধ করেছি। এবছর ৪৬ হাজার কোটি টাকা দেনা দিতে হবে। তোমাদের তো একটা ব্যবস্থা করতে হবে। নইলে এত টাকা দেব কীভাবে?”
বিশ্ব উষ্ণায়ণ এবং বজ্রাঘাতে মৃত্যুর বিষয়টিও বৈঠকে তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। উষ্ণায়ণ নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি মোকাবিলা অবিলম্বে জরুরি বলে জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নীতি আয়োগের বৈঠকে রাজ্যের আর্থিক বঞ্চনা নিয়েও সরব হলেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। কেন্দ্রের একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। সাংবাদিকদের মুখ্যমন্ত্রী জানান, অর্থ কমিশনের নয়া নীতিতে তিনি বেশ ক্ষুব্ধ। বিভিন্ন ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকা বা নন পারফর্মিং রাজ্যগুলির দিকে বাড়তি নজর দেওয়া হচ্ছে৷ বিশেষ আর্থিক সাহায্যও দেওয়া হচ্ছে৷ এই নিয়েই প্রশ্ন তোলেন তিনি। তাঁর মতে, যাঁরা পিছিয়ে পড়েছে তাঁদের সাহায্য করা নিয়ে তাঁর কোনও আপত্তি নেই৷ কিন্তু যাঁরা এগিয়ে বা পারফর্মিং রাজ্য তাদের শাস্তি ভোগ বা বঞ্চনা সহ্য করতে হবে কেন? এবছরও প্রায় ৪৬ হাজার কোটি টাকা ঋণের বোঝা রয়েছে রাজ্যসরকারের ঘাড়ে৷ তা সত্ত্বেও উন্নয়নের কাজে চালিয়ে যাচ্ছেন। তবুও কেন্দ্রের আর্থিক বঞ্চনা তাঁকে কেন মেনে নিতে হবে? এছাড়াও বিভিন্ন প্রকল্পের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ কমনো নিয়েও সরব হন তিনি।
Be the first to comment