পাথরপ্রতিমার সরকারি অনুষ্ঠান থেকে মমতার ঘোষণা, “আমি আপনাদের পাহারাদার। রাতদিন এক করে আপনাদের পাহারা দেব। কিন্তু নাগরিকত্ব কাড়তে দেব না।”
সোমবার দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা সফরে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। গঙ্গাসাগর মেলা উপলক্ষে প্রতিবারের মতো এবারও জেলা সফরে গিয়ে আগে একাধিক কর্মসূচি সেরে নিচ্ছেন। এদিন আরও একবার মমতা স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, বাংলায় তিনি এনপিআর, এনআরসি, সিএএ—এর কোনওটাই হতে দেবেন না। মানুষকে আশ্বস্ত করতে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কোনও চিন্তা করবেন না। আপনাদের সব চিন্তা আমার উপর দিয়ে দিন। আপনারা নিশ্চিন্তে থাকুন।”
ক’মাস আগেই বুলবুল ঝড়ে বিধ্বস্ত হয়েছিল দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার একাধিক জনপদ। মুখ্যমন্ত্রীকে দেখা গিয়েছিল নবান্নের কন্ট্রোল রুমে রাত জেগে নজরদারি চালাতে। এদিন সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বুলবুলের সময়েও পাহারা দিয়েছি। একজনেরও যাতে প্রাণ না যায় সেই চেষ্টা করেছি। এখনও আপনাদের বলছি, কেউ আপনাদের নাগরিকত্ব কাড়তে পারবে না। ওসব করতে হলে আমার মৃতদেহের উপর দিয়ে করতে হবে।”
এনপিআর তথা জাতীয় জনসংখ্যাপঞ্জি নিয়ে কেন্দ্র হুঁশিয়ারির সুরে জানিয়েছিল, রাজ্য যদি বাধা দেয় তাহলে দিল্লি থেকে লোক পাঠিয়ে সেই কাজ করা হবে। তথ্য সংগ্রহ করবেন সেই কর্মীরা। এদিন মমতা তাকেও কার্যত চ্যালেঞ্জ করে দেন। বলেন, “কেউ কেউ বলছে অন লাইনে করবে। অনলাইনে তো ভাত ফোটানো যায় না! আরে বাবা, অনলাইনে অর্ডার দিলেও তো ফিজিক্যালি বাড়িতে এসে জিনিস দিতে হয়। বাবার নাম জানতে চাইবে, মায়ের নাম জানতে চাইবে, ঠাকুমার নাম জানতে চাইবে, কাউকে কোনও তথ্য দেবেন না। ওরা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন কথা বলছেন। ওদের কথা শুনবেন না।”
পর্যবেক্ষকদের মতে, মমতা হয়তো সংঘাতকে আরও তীব্র করতে চাইছেন। তাঁদের বক্তব্য, বিজেপি যেমন মেরুকরণকে তীব্র করতে চাইছে, তেমন মমতাও চাইছেন উদার হিন্দু ধর্মনিরপেক্ষ ভোটকে নিজের দিকে টানতে। তাই এনপিআর, সিএএ নিয়ে আক্রমণের মাত্রাকে প্রতিদিন তীব্র করছেন।
Be the first to comment