লকডাউনের মধ্যে কারও যেন কোনও অত্যাবশকীয় পণ্য পেতে অসুবিধা না হয় সেজন্য প্রশাসনকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি বলেন, রাজ্যের সর্বত্র হোম ডেলিভারি চালু থাকবে। এই কাজে যুক্তদের বাধা দেওয়া যাবে না।
রাজ্যে লকডাউন চালু হওয়ার পর থেকেই অত্যাবশকীয় সামগ্রী নিয়ে চিন্তা শুরু হয়ে যায় সাধারণ মানুষের মধ্যে। সকলেরই চিন্তার বিষয় হয়ে ওঠে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস মিলবে তো! বিশেষ করে সমস্যার মুখে প্রবীণ নাগরিকরা। একলা থাকেন এমন প্রবীণ নাগরিকরা মূলত হোম ডেলিভারির উপরেই নির্ভর করেন। তাদের কাছে যাতে প্রয়োজনীয় সামগ্রী ঠিক মতো পৌঁছে যায় তার জন্য হোম ডেলিভারির কাজ বিনা বাধায় চলতে দেওয়ার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
জাতীয় লকডাউনের প্রথম দিনে সাংবাদিক বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। করোনা-মোকাবিলায় ঘোষণা করলেন একগুচ্ছ পদক্ষেপ। এছাড়াও লকডাউনের জেরে সমস্যা মোকাবিলাতেও পরামর্শ ও নির্দেশ দিলেন তিনি। এরমধ্যে নাগরিকদের জন্য যেমন ছিল পরামর্শ, তেমনই লকডাউনের সময় পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও ছিল একাধিক নির্দেশ।
মুখ্যমন্ত্রী আজ বলেন, ‘অযথা আতঙ্কিত হয়ে জিনিস মজুত করবেন না। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের জোগান থাকছেই। তবে সবাই সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং মেনে চলুন। মনে রাখবেন দূরত্ব মেনে চলা মানে মানুষকে আলাদা করা নয়।’ বাজারে গিয়ে কীভাবে দূরত্ব বজায় রেখে দাঁড়াতে হবে, তা ছবি এঁকেও বুঝিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হাউজিং সোশ্যাইটিতে প্রবীণদের দেখভালের জন্য অন্য আবাসিকদের এগিয়ে আসার অনুরোধও করেন তিনি।
পুলিশের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক ক্ষেত্রেই খবর পেয়েছি যে, অজ্ঞতার কারণে জরুরি পরিষেবাকে আটকে দেওয়া হচ্ছে। সবজিওয়ালাকে আটকাবেন না। হোম ডেলিভারি বয়কে আটকাবেন না। জরুরি পরিষেবাকে আকটাবেন না। কৃষককে চাষ করা থেকেও নয়। তবে দেখতে হবে, কোথাও জমায়েত হতে দেওয়া চলবে না।’ এই বিষয়ে নজর দিতে পুলিশের পদস্থ কর্তাদের পাশাপাশি জেলাশাসক, BDO-দেরও ভূমিকা নিতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। জরুরি পরিষেবাকে বাধা দিলেও বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি দেন তিনি। হোম ডেলিভারির জন্য সংস্থাগুলিকে লালবাজার বা পুলিশের থেকে পাস বানিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়াও পুলিশের মধ্যেও সমন্বয় বাড়ানোর কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। কলকাতা পুলিশের ইস্যু করা যাতে হাওড়া বা অন্য জেলার পুলিশ বাধা না দেয়, তা নিশ্চিত করতেও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স বা বিমান সংস্থার কর্মীদের হেনস্থার অভিযোগ উঠেছিল। হাউজিং সোশ্যাইটিতে বা বাড়ির মালিকদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ভাইরালও হয়। আজ এই প্রসঙ্গেও সতর্ক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ‘আর যেন এই ধরনের অভিযোগ না শুনি আমি।’
Be the first to comment