ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মীদের কোনওরকম হেনস্থা তিনি বরদাস্ত করবেন না বলে আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার জানালেন, স্বাস্থ্য কর্মীদের নিয়ে গুজব ছড়ালেই তিনি কড়া ব্যবস্থা নেবেন।
বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের এক চিকিৎসকের নাম করে বৃহস্পতিবারই ফেসবুক-হোয়াটস অ্যাপে গুজব ছড়িয়েছিল, তিনি নাকি করোনা আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন। কিন্তু শুক্রবার সকালেই স্বাস্থ্য ভবন জানিয়ে দেয় পুরোটাই মিথ্যে কথা। এরপরই বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক করে ভুয়ো খবর ছড়ানো নিয়ে কড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “একজন ডাক্তার ডিউটি করছেন, আর কেউ কেউ তাঁকে অসুস্থ বলে রটিয়ে দিচ্ছে। আমি প্রশাসনকে বলেছি দেখতে। যারা এসব করবে তাদের বিরুদ্ধে স্ট্রং অ্যাকশন হবে।” মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো খবরের ব্যাপারে সিআইডি, এসটিএফ নজর রাখছে।”
মুখ্যমন্ত্রী আবেদন জানিয়ে বলেন, “স্বাস্থ্যকর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন। এই সময়ে ব্যঙ্গ, মস্করা, ঠাট্টা করবেন না। আগুন নিয়ে খেলবেন না। এটা মস্করার সময় নয়। মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সময়।”
শুধু ব্যঙ্গ-বিদ্রুপই নয়, দেশের বহু স্থানেই করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা করে হুমকির শিকার হচ্ছেন ডাক্তারবাবু, নার্স বা স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা।মেস ও ভাড়া বাড়িগুলি থেকে রীতিমতো নোটিশ জারি করে ঘর খালি করার কথা বলা হয়েছে চিকিৎসক-সহ সকল স্বাস্থ্যকর্মীদের। খোদ কলকাতাতেও এই ঘটনা ঘটেছে।
এব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “এই রোগে আমাদের সামাজিক মেলামেশা কমাতে হবে। কিন্তু কাউকে এক ঘরে করে দেওয়া চলবে না।”
মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি, “ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্য কর্মীরা অনেক সচেতন। ওঁদের কাজ করতে দিন। ওঁদের হেনস্থা করলে বরদাস্ত করব না। সোশ্যাল বয়কট চলবে না।”
কিন্তু দু-দিন আগে মুখ্যমন্ত্রীর এই হুঁশিয়ারির পরও সমাজের একটা অংশে কোনও হেলদোল নেই। এখনও তাঁরা চিকিৎসকদের নিয়ে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করছে, গুজব ছড়াচ্ছে। তবে এবার মুখ্যমন্ত্রী ‘লাস্ট ওয়ার্নিং’ দিলেন।
এই সময়ে কী খেলে শরীর সুস্থ থাকবে এদিন তার তালিকা বেঁধে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “এই সময় রোজ নিমপাতা খান। টক দই খান অবশ্যই। সজনে ডাটাও খুব উপকারী। সারাদিন হালকা খাবার খান, দেখবেন শরীর ভাল থাকবে।”
এদিন মুখ্যমন্ত্রীকে সাংবাদিক বৈঠকে প্রশ্ন করা হয়, রাজ্যে পাউরুটির আকাল নিয়ে। লকডাউনে বেকারিগুলি বন্ধ থাকায় পাউরুটি উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। সে ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “পাউরুটি না পেলে হাতরুটি খান। বেকারিতে যাঁরা কাজ করেন তাঁদেরও তো বউ-বাচ্চা আছে। তাঁরা আসবেন কী করে? মানবিক ভাবে দেখুন।”
দেখুন স্বাস্থ্য মন্ত্রকের রিপোর্ট
Be the first to comment