দীর্ঘদিন ধরেই টানাপোড়েনে রয়েছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। লকডাউনের শুরু থেকেই দেশের বিভিন্ন রাজ্যে তাদের রাস্তায় হাঁটতে দেখা যাচ্ছে। এমনকি বারবার মর্মান্তিক ঘটনার শিকারও হচ্ছেন তাঁরা।
প্রথমে ট্রেনে চাপা পড়ে মৃত্যুর ঘটনা, এরপর শনিবার আরও এক ভয়াবহ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে বেশ কয়েকজন শ্রমিকের। এরপরই এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের কথা জানাল রাজ্য সরকার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন ট্যুইট করে সেকথা জানিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনে করে যাঁরা বাড়ি ফিরবেন তাঁদের সব খরচ দেবে রাজ্য সরকার। এর জন্য কোনও পরিযায়ী শ্রমিকের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হবে না।
ট্যুইটের সঙ্গে সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া একটি চিঠিও পোস্ট করেছেন তিনি। সেখানে রাজ্যের মুখ্যসচিবের পক্ষ থেকে রেলওয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যানকে বলা হয়েছে, সারা দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে যে শ্রমিকেরা পশ্চিমবঙ্গে ফিরছেন, তাঁদের যাতায়াতের সমস্ত খরচ বহন করবে রাজ্য সরকার।
রেল মন্ত্রককে অনুরোধ তাঁরা যেন সমস্ত সংশ্লিষ্ট রেল বিভাগগুলিকে জানিয়ে দেন বিষয়টি। যে শ্রমিকেরা পশ্চিমবঙ্গে ফেরার ট্রেনে ওঠা পরিযায়ী শ্রমিকদের থেকে কোনও প্রকার অর্থ দাবি না করা হয়। পশ্চিমবঙ্গে সরকারের চাহিদা অনুযায়ী সব ট্রেনগুলি যেন সময়মতো চলে।’
শ্রমিকদের আনার বন্দোবস্ত করার জন্য বার বার কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কাছে দাবি করেন বিরোধীরা। এই পরিস্থিতিতে ১ মে থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ‘শ্রমিক স্পেশাল’ চালানোর কথা ঘোষণা করে রেল। কিন্তু তারপরেও রাজ্য সরকার পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরানোর জন্য উদ্যোগী হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। রাজ্য সরকার মাত্র ৭টা ট্রেনকে ঢোকার অনুমতি দিয়েছে, আর কোনও ট্রেন চায়নি বলে সরব হয় বিরোধীরা।
পশ্চিমবঙ্গে পরিযায়ী শ্রমিকদের ট্রেন ঢুকতে দেওয়ার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লেখেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বাংলায় পরিযায়ী শ্রমিকদের ট্রেন ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল। অভিযোগ করেন, পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফেরার জন্য কেন্দ্র সুবন্দোবস্ত করলেও, রাজ্য সরকার মাত্র ৭টা ট্রেনকে ঢুকতে দিয়েছে। এরপরই এদিন টুইট করে ১০৫টি ট্রেন চালানোর কথা ঘোষণা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, “দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাঁরা আটকে রয়েছেন এবং যাঁরা বাংলায় ফিরতে চান, তাঁদের সাহায্য করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা ১০৫টি অতিরিক্ত স্পেশাল ট্রেনের বন্দোবস্ত করেছি। আগামী দিনে এই ট্রেনগুলি বিভিন্ন রাজ্য থেকে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্টেশনে আসবে।”
Be the first to comment