লাদাখে সেনামৃত্যু নিয়ে কিছুটা হলেও চাপে পড়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। তাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকে কিছুটা হলেও সুর চড়ালেন বিরোধীরা। তবে, চিনকে শিক্ষা দিতে গোটা দেশ ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়বে বলে এদিন প্রধানমন্ত্রীকে কথা দিয়েছেন বিরোধীরা। এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে সাফ জানান, ‘চিনকে রেল, বিমান-টেলিকমের মতো ক্ষেত্রে একদমই ঢুকতে দেবেন না।’
এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘চিনে কোনও গণতন্ত্র নেই। তারা একনায়কতন্ত্র চালাচ্ছে। তারা যা ভাবে, তাই করে। আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। ভারত জিতবেই, চিন হারবে। একযোগে আমাদের কথা বলতে হবে। ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কথা ভাবতে হবে। আমরা একযোগে সরকারের পাশে আছি।’
তবে, এদিনের বিরোধী বৈঠকে সরকারের বিরুদ্ধে কিছুটা হলেও সুর চড়িয়েছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। তিনি বলেন, ‘৫ মে লাদাখে চিন যখন প্রথম অনুপ্রবেশ করে, তখনই এই বৈঠক ডাকা উচিৎ ছিল। কিন্তু তখন তা ডাকা হয়নি।’ প্রধানমন্ত্রীর কাছে তিনি প্রশ্ন করেন, ‘কবে থেকে চিনা অনুপ্রবেশ করল, তা নিয়ে কি সরকারের কাছে তথ্য ছিল? গত সোমবারের এই ঘটনা কি ইন্টেলিজেন্স ব্যর্থতা? সরকারকে কি আগাম সতর্ক করা হয়নি? কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এক্ষেত্রে কি আগাম সতর্ক করতে ব্যর্থ?’ তিনি বলেন, ‘কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা করে কী লাভ হল, যার জন্যে প্রাণ দিতে হল ২০ জন জওয়ানকে?’
বৃহস্পতিবারই সব দলের শীর্ষ নেতাকে ফোন করে বৈঠকের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। কেন আরজেডি-কে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন দলের নেতা তেজস্বী যাদব। আমন্ত্রণ ছিল না আদ আদমি পার্টিরও। সরকারের সূত্রের দাবি, যে দলগুলির সংসদে অন্তত পাঁচজন সদস্য রয়েছে, শুধুমাত্র তাদেরই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দলে রয়েছেন চারজন সাংসদ। তবে, এদিনের বৈঠকে ছিলেন সীতারাম ইয়েচুরি, শরদ পাওয়ার, এমকে স্টালিন, মায়াবতী, জগনের মতো নেতারা।
তবে বিরোধী দলগুলি যাই বলুক না কেন, এই মুহূর্তে পূর্ব লাদাখের যা পরিস্থিতি, তাতে বিশেষ সুর চড়িয়ে চিনের সেনার সঙ্গে আলোচনা করার জায়গায় ভারত নেই, সে কারণে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে চিনা সেনাকে তাদের এলাকায় ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশেষজ্ঞরা৷
Be the first to comment