প্রথমে জানা গিয়েছিলো আগামী ২১ জুলাই ‘শহিদ দিবস’-এর কর্মসূচি নিয়ে কথা হবে, কিন্তু বাস্তবে শুক্রবার দলের নেতাদের সঙ্গে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভার্চুয়াল বৈঠক হয়ে দাঁড়ালো আগামী বছরের বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতির মঞ্চ।
শুক্রবার মমতা দলের নেতাদের সাফ বলেন, ‘বিজেপি নেতারা রাস্তায় নামছেন, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে প্রচার করছেন, মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছেন। আর আপনারা ঘরে চুপচাপ বসে আছেন কেন? ৬-১৩ জুলাই কর্মসূচি দিয়ে দেবে দল। তা নিজের এলাকায় এলাকায় পালন করতে হবে বিধায়কদের।’ শুধু তাই নয়, রীতিমতো নির্দেশের সুরে তিনি বিধায়কদের উদ্দেশে বলেন, ‘প্রত্যেক বিধায়ককে নিজের বিধানসভায় জিততেই হবে।’
শুক্রবার বিকেলে বসেছিল বৈঠক। সেখানেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আবারও দলের নেতাদের দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার বিষয়টি নিয়ে ফের উষ্মা প্রকাশ করেন। বলেন, আমফান ঝড়ের দুর্যোগ ও ত্রাণ নিয়ে যারা দুর্নীতি করেছেন, তাদের কোনও ভাবে ছাড়া হবে না। প্রধান হোক বা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, দুর্নীতির প্রমাণ হলে তার বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবেই। কেউ যেন তাদের বাঁচানোর চেষ্টা না করেন।
এছাড়াও দুর্নীতিবাজ নেতাদের উদ্দেশে জানিয়ে দেন, ‘আমার দলে কর্মীরাই সম্পদ। যাঁরা ভাবছেন দুর্নীতি করে দলকে বদনাম করবেন, তাদের বিরুদ্ধে দল কড়া ব্যবস্থা নেবে। প্রয়োজনে আমি নতুন নেতা তৈরি করে নেব। তবে দুর্নীতির সঙ্গে আপস করব না।’
পাশাপাশি এদিন নেতাদের রীতিমতো হোমটাস্ক দিয়ে দিয়েছেন তিনি। বিশেষত বিধায়কদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘৬-১৩ জুলাই কর্মসূচি দিয়ে দেবে দল। তা নিজের এলাকায় এলাকায় পালন করতে হবে বিধায়কদের।’ বিধানসভা জিততে যে বিধায়কদেরই এখন এগিয়ে আসার সময়, তা স্মরণ করিয়ে তৃণমূল নেত্রীর নির্দেশ, ‘রেল ও কয়লার বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সরকার যে পদক্ষেপ নিচ্ছে, তা যে জনবিরোধী, তা সাধারণ মানুষকে বোঝাতে হবে।
এলাকার মানুষের কাছে গিয়ে বলতে হবে, রাজ্য সরকার কী কাজ করেছে। কেন্দ্রীয় সরকার কী ভাবে রাজ্যকে বঞ্চনা করছে। পেট্রোল-ডিজেলের দাম যেভাবে দিন-দিন বাড়ছে, তা নিয়ে বুথে বুথে প্রতিবাদ সংগঠিত করতে হবে। দলীয় নির্দেশ মেনে সেইসব কর্মসূচি পালন করতে হবে বিধায়কদের। বিধায়কদেরই দায়িত্ব নিতে হবে।’
যদিও করোনা পরিস্থিতিতে নেতাদেরও যে নিজেদের স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখতে হবে। তাও উল্লেখ করেছেন তিনি। নেতাদের বলেন, ‘কোভিড সংক্রমণ রয়েছে। কিন্তু তার মধ্যেও সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং মেনে জনসংযোগ করতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হতে হবে।’
Be the first to comment