সামাজিক ভাবে পিছিয়ে পড়া দুটি অংশের জন্য নতুন বোর্ড গঠন করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী; পড়ুন!

Spread the love
উনিশের ভোট আসছে। তার আগে সামাজিক ভাবে পিছিয়ে পড়া দুটি অংশের জন্য নতুন বোর্ড গঠন করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নমঃশূদ্ররা ঐতিহাসিক ভাবেই সমাজের পিছিয়ে পড়া অংশ। বাংলায় তাদের জনসংখ্যা কম নয়। অন্যদিকে মতুয়া একটি সম্প্রদায়। মূলত বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী উত্তর চব্বিশ পরগণার বিস্তীর্ণ অংশ মতুয়া সম্প্রদায় অধ্যুষিত। সমাজ বিজ্ঞানীদের অনেকের মতে, মতুয়ারা হলেন নমঃশূদ্রদের মধ্যে দলিত অংশ। যার মানে, অতি পিছিয়ে পড়া শ্রেণি।
সোমবার নবান্নে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর খাদ্যমন্ত্রী তথা উত্তর চব্বিশ পরগণার তৃণমূল জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানান, “সমাজের এই দুই অংশের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যেই নতুন বোর্ড গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” বোর্ড দুটির চেয়ারম্যান কারা হবেন তা অবশ্য এ দিন ঘোষণা করা হয়নি।
যদিও রাজনৈতিক শিবিরের মতে, ব্যাপারটা আদ্যন্ত রাজনীতিরই অঙ্ক। বাংলার রাজনীতিতে পুরোদস্তুর জাতপাতের অঙ্ক ঢুকিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলায় আপাত দর্শনে কখনওই জাতপাত নির্ভর রাজনীতি আগে ছিল না। বাম জমানায় অনিল বিশ্বাসরা এমন ভাবে তা করতেন যা নজরেও পড়ত না। তপসিলি জাতি ও উপজাতি অধ্যুষিত এলাকায় রাজনৈতিক আন্দোলনে ও নেতৃত্বে সেখানকার স্থানীয় মানুষের প্রতিনিধিত্ব বাড়িয়ে তা করতেন। কিন্তু সরাসরি কোনও একটি জাতি বা সম্প্রদায়কে তোষণের রাজনীতি সচরাচর দেখা যায়নি। কিন্তু এ বার তা শুরু হয়ে গেল।
শাসক দল সূত্রে বলা হচ্ছে, বাস্তব হল, লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি মতুয়া সম্প্রদায়কে কাছে টানার চেষ্টায় নেমে পড়েছে। সংসদে নাগরিকরত্ব আইন পাশ করে তাদের সুবিধা দেওয়ার কথাও সীমান্তে প্রচার করছেন সঙ্ঘ পরিবারের স্বয়ংসেবকরা। তা নিয়ে তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের মধ্যে ইতিমধ্যেই চিন্তা ঢুকে গিয়েছে। একই ভাবে নদীয়া, উত্তর ২৪ পরগণা, দক্ষিণ ২৪ পরগণা এবং উত্তর বঙ্গের জেলাগুলিতে নমঃশূদ্রদের মধ্যে ধর্মীয় মেরুকরণে সক্রিয় বিজেপি। ফলে তা মোকাবিলার জন্য পথ বের করা অনিবার্যই ছিল।
প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত ভোটে ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুরের আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় বিজেপি ইতিমধ্যেই ভাল ফল করেছে। সেখানে তাদের জনভিত্তি আগের থেকে অনেকটাই মজবুত করতে সফল হয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে আদিবাসী উন্নয়নের জন্যও সম্প্রতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বোর্ড গঠন করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ বার আরও দুটি নতুন বোর্ড গঠন করা হল। এখন দেখার রাজনৈতিক ভাবে এই সব বোর্ড কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারে কিনা। পিছিয়ে পড়া অংশের মানুষগুলির প্রকৃত ক্ষমতায়নের জন্য বোর্ড শেষ পর্যন্ত সদর্থক ব্যবস্থা নিতে পারে কিনা তাও দেখার।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*