ব্যানার্জি বনাম ব্যানার্জি! সুদীপ, আকাশের পোস্টে সামাজিক মাধ্যমে চওড়া হচ্ছে ফাটল

ঘৃতাহুতি’ ফিরহাদের

Spread the love

বন্দ্যোপাধ্যায় বনাম বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের ‘পাওয়ার সেন্টার’ দ্বন্দ্বে কি পরিবারে ফাটল ধরছে? অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নীতিকে সমর্থন জানিয়ে ফেসবুকে ‘এক পদ এক ব্যক্তি’ লেখা পোস্ট আকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো। অভিষেকের ভাই। একই পথে হেঁটে পোস্ট করেছেন পরিবারের আরেক সদস্য অদিতি গায়েনও। তিনি অভিষেকের পিসির মেয়ে। পোস্ট করেছেন যুব তৃণমূল নেতা সুদীপ রাহাও। এই নীতির সমর্থনে যুক্তি দেন তিনি। সুদীপ রাহা উল্লেখ করেন, “দলনেত্রী নিজেই বলেছেন, পার্টি থেকে একটা নতুন রেজোলিউশন নেওয়া হয়েছে এক ব্যক্তি এক পদ । আমি দলের একজন সাধারণ কর্মী । আমি সেক্ষেত্রে বলেছি দলনেত্রীর এই বক্তব্যকে দল মান্যতা দিক। “

শুধু সুদীপ, আকাশ বা অদিতিই নয়। এক পদ এক ব্যক্তিকে সমর্থন জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন দেবাংশু ভট্টাচার্যও। দলের ছাত্র যুবদের অনেকেই সরাসরি এ ক্ষেত্রে অভিষেকের নীতির পক্ষেই সওয়াল করেছেন। এক পদ এক ব্যক্তি নীতি কার্যকর করা নিয়েও সিনিয়রদের সঙ্গে দূরত্ব বেড়েছে অভিষেকের।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবারই যুব তৃণমূলের এক অন্যতম নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছিলেন। যা শোরগোল ফেলে দেয় রাজ্য রাজনীতিতে। অস্বস্তি বাড়ে তৃণমূল শিবিরেও। পুরভোটে দ্বিগুণ কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে নির্বাচন করানোর দাবি জানান তিনি। তাতে প্রশ্ন ওঠে একাধিক। তারপরই মধ্যরাতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই আকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফেসবুক পোস্ট। রাত বাড়তে বদলে যেতে থাকে যুব তৃণমূল নেতাদের ফেসবুকের কভার ফটো। সামাজিক মাধ্যমে আন্দোলনের বার্তা প্রতীয়মান হতে থাকে।

প্রত্যেকেই সওয়াল করেন এক ব্যক্তি এক পদ নীতি নিয়ে। আর তাঁদের বক্তব্যের কেন্দ্রবিন্দুতেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাতলে দেওয়া নীতি। যুব তৃণমূল নেতাদের কভার ফটোতে যে বার্তা, তাতে দৃশ্যত পেশাদারিত্বের ছাপ স্পষ্ট। লেখা, ‘আই সাপোর্ট ওয়ান পার্সন ওয়ান পোস্ট ইন এআইটিসি।’

যুবদের সমর্থন করেন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। আর ভারসাম্য বজায় রেখে মুখপাত্র কুণাল ঘোষের কৌশলী বার্তা, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সর্বাধিনায়ক ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সেনাপতি।” একুশের নির্বাচনে ল্যান্ড স্লাইড ভিক্ট্রির পর তৃণমূলের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে অভিষেককে পার্টির সাধারণ সম্পাদক করেন মমতা। সঙ্গে ঘোষণা করেন এক ব্যক্তি এক পদ নীতি কার্যকর করার কথা।

কিন্তু কলকাতার নির্বাচনে প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পরই দেখা গেল সেই নিয়ম কার্যকর হয়নি। ভিতরে ভিতরে বাড়তে থাকে ক্ষোভ। এক ব্যক্তি এক পদ নীতি কার্যকর করতে পারেনি তৃণমূল। কিন্তু এই নীতির পক্ষে সওয়াল করেন অভিষেক। তিনি ডায়মন্ড হারবারে দাঁড়িয়ে বলেন, “দলে ৯০-৯৫ শতাংশ এক ব্যক্তি এক পদ নীতি কার্যকর করা গিয়েছে। এটাকে একশো শতাংশ করতে হবে। আমি অন্তত যতদিন জেনারেল সেক্রেটারি থাকব, সেটা করব।” অভিষেকের পাশে দাঁড়িয়ে এবার সুর চড়াচ্ছেন যুব নেতারাও। সামাজিক মাধ্যমে চড়ছে আন্দোলনের সুর।

তবে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলছেন অন্য কথা। তিনি বললেন, “সোশ্যাল মিডিয়ায় যা বলা হচ্ছে তা দলের বিরুদ্ধে। এক ব্যক্তি এক পদ নীতি দল অনুমোদন করছে না। দলের নীতি নতুন করে নির্ধারণ করবেন নেত্রী। দলে কোনও বিভাজন নেই। নেত্রী সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।”

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*