নাগরিকতা নিয়ে অসম সরকারের নীতি বহু বাঙালিকে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে অভিযোগ তুললেন এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, স্ত্রী ও সন্তানদের নাম রয়েছে। অথচ এনআরসির তালিকায় পরিবারের কর্তাটির নাম নেই। তিনি ভাবছেন, ছেলে-মেয়ে-স্ত্রীকে ফেলে কোথায় যাব? অসহায়তা বোধ থেকে এমন বহু মানুষ আত্মহত্যা করছেন। এটা কি চলতে পারে?
কোচবিহারের রাসমেলা ময়দানের সভায় কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের সমালোচনার পাশাপাশি তুলোধোনা করলেন অসম সরকারকে। বললেন, “৪০ লক্ষ বাঙালি খাঁটি ভোটার। তাঁদের নাম নেই এনআরসি তালিকায়। আমরা বাঙলায় বসে এমনটা ভাবতেই পারিনা। এঁদের পাশে আছি আমরা।”
গত ৩০ অগস্ট অসমে জাতীয় নাগরিক পঞ্জী প্রকাশ করা হয়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কায় গোটা অসমজুড়ে জারি হয়েছিল কড়া সতর্কতা। তবে তেমন কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। ১৯৭১ সালের ২৪শে মার্চের পরে যাঁরা এসেছেন তাঁদের নাম বাদ পড়ে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি থেকে।
জাতীয় নাগরিক পঞ্জিকরণ (এনআরসি) তো ছিলই। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ডি-ভোটারের (ডাউটফুল ভোটার) আতঙ্ক। সেই আতঙ্কই কার্যত গ্রাস করেছে অসমের বাঙালিদের। অভিযোগ, গত জুলাই মাস থেকে তিন জন বাঙালি আত্মহত্যা করেছেন অসমে। ভিটে হারানো, নাগরিকত্ব হারানোর আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন অসমের বাঙালিরা। গত জুলাই মাসে অসমের ওদালগুড়িতে আত্মহত্যা করেছিলেন গোপাল দাস। তাঁর স্ত্রীর নামে এসেছিল ডি-ভোটারের নোটিস। ২১ অক্টোবর ভিটে হারানোর আতঙ্কে আত্মহত্যা করেছেন দরং জেলার খারুপেটিয়ার আইনজীবী তথা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক নিরোদবরণ দাস। ডি-ভোটারের তালিকায় নাম চলে যাওয়ায় বাড়ির সামনের একটি গাছে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে পড়েন সাইকেল মেকানিক দীপক দেবনাথ।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কোথাও কোনও ভাইয়ের ওপর অত্যাচার আমরা মানব না। বাংলা সবার পাশেই দাঁড়াবে।”
Be the first to comment