এটা হিন্দু-মুসলিম ইস্যু না, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াই: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

Spread the love

আমরা সবাই নাগরিক এই আওয়াজটাকেই তুলে ধরতে হবে। কারোর দয়ায় আমরা এদেশে বাস করিনা।

আমাদের আন্দোলন সমাজের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে চলবে। এই আন্দোলন থামবে না। কেউ যদি ভাবে ৬ বছর ধরে ক্ষমতায় আছি যা ইচ্ছে তা করব। দেশের স্বাধীনতা, দেশের ভালোর জন্য এটা হলে, নিশ্চয় সমর্থন করব।

১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার ৭৩ বছর পরে আমাদের কৈফিয়ত দিতে হবে, প্রমাণ দিতে হবে আমরা কারা নাগরিক আর কারা নাগরিক নয়? ভারত স্বাধীন হওয়ার পর বিজেপির নেতারা কোথায় ছিল? না করেছে দেশের স্বাধীনতা আন্দোলন না দেশ গড়েছে। আজ মানুষের মধ্যে ভাগাভাগি করছেন? মানুষে মানুষে লড়িয়ে দিচ্ছেন?

মোদীবাবু অমিত শাহ বাবু মান্যবরেষু নেতারা ক্ষমতা থাকলেই সিএবি এনআরসি চাপিয়ে দিতে হবে তা নয়, আমাদের সংবিধান হচ্ছে আমাদের রক্ষাকবচ। সবাইকে ভয় দেখিয়ে সংবিধানের স্তম্ভগুলিকে নিষ্ক্রিয় করে দিয়ে যদি মনে করেন গায়ের জোরে যা ইচ্ছে তাই করে যাবেন, তা কিন্তু চলবে না।

ওরা বলছে এটাকে হিন্দু মুসলমানের দিকে নিয়ে যাব। আমরা বলছি এটা হিন্দু মুসলমানের আন্দোলন নয়, এটা দেশের গনতান্ত্রিক আন্দোলন।

আজকের আমাদের কি দুর্ভাগ্য। আজ আমাদের জবাব দিতে হচ্ছে বাবা মায়ের জন্ম কবে? বলছে ১৯৭১ সালের ২৪শে মার্চের মধ্যে যারা আছেন এখানে তাদের বাবা মায়ের বাড়ির ঠিকানা জমির দলিল চাই, বার্থ সার্টিফিকেট চাই, যারা বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের পরে এখানে এসেছেন তারাতো ভারত সরকারের চুক্তি অনুযায়ী এখানে এসেছেন। ১৯৭১ সালের মার্চ পর্যন্ত যারা এসেছেন, তারা সবাই নাগরিক।

বড় বড় নেতাদের ৫০ বছরের বেশী বয়স হয়ে গেছে। তাদের বয়সকে আমি সম্মান করি। ১৯৭১ সাল ধরলে তাদের বয়স কত হচ্ছে? বিজেপির জন্ম হয়েছে ১৯৮০ সালে তারা আবার ভারতের নাগরিকের প্রমাণ চায় কি করে? আগে বললো আধার কার্ড করতে হবে, না হলে টেলিফোনের লাইন, বাড়ির ঠিকানা, ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট, রেশন কার্ড হবে না। তাহলে কি এখন আধারটা অন্ধকারে চলে গেছে? আজ বলছেন আধার নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে গন্য হবে না। যেন মগের মুলুক পেয়ে গেছে।

কত লোকের ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট, রেশন কার্ড, টেলিফোনের লাইন বাতিল করেছে আধার কার্ড না থাকার জন্য। আমরা সেটা কোর্টে কেস করে আটকে ছিলাম।

এটা হিন্দু-মুসলিম ইস্যু না। এটা দেশের আন্দোলন। এটা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াই।

কয়েকদিন আগে ওরা বলেছে, যারা আন্দোলন করছে তাদের পোশাক দেখে চেনা যায়। আজ আমি শাল গায়ে দিয়েছি। এটা দেখে কেউ বলতে পারবে এটা হিন্দু শাল না মুসলিম শাল?

আজ আমার কাছে খবর এল বিজেপি কিছু টুপি কিনেছে। কাল সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়ানোর জন্য তাদের বাজারে ছাড়বে। ওদের এই ষড়যন্ত্রে পা দেবেন না।

আমি আমার যুব প্রজন্মকে বলব, সোশ্যাল মিডিয়ায় যা দেখছেন, সব বিশ্বাস করবেন না। স্যোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যেমে অনেক ফেক ভিডিও ছড়াচ্ছে। ওদের টাকার তো আর অভাব নেই। বলছে হিন্দুদের কিছু লাগবে না! তাই নাকি? আইন যখন হয়, তখন আইনটা সবার ক্ষেত্রে এক হয়। আইন সবার ক্ষেত্রে সমান। তবে আসামে ১৩ লক্ষ হিন্দুর নাম বাদ গেল কেন? বিহারীদের, ইউপি, তামিল, মুসলানের নাম বাদ গেছে।

আজ সারা ভারতের বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলো ১৪৪ ধারা কিন্তু আজ নাগরিকেদের যে ধারা সেটা কি দেখতে পাচ্ছেন? এসব ধারা আর অসাংবিধানিক কাজ আমরা রুখে দেব। আমাদের দুর্বল ভাবার কোনও কারণ নেই। আমরা জেল বা এজেন্সির ভয়ে মাথানত করব না।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*