আবারও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিরোধিতার সুর চড়ালেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসির মাধ্যমে কেন্দ্র বিভাজনের রাজনীতি করছে বলে অভিযোগ তৃণমূল সুপ্রিমোর। কেন্দ্রীয় সরকার ধর্মের নামে দেশকে টুকরো করার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূলনেত্রী।
কেন্দ্রীয় আইনের বিরুদ্ধে ২২ জানুয়ারি পাহাড়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি হবে বলে ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারও আগে নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসির প্রতিবাদে ৯ জানুয়ারিও বারাসত থেকে মধ্যমগ্রাম পর্যন্ত প্রতিবাদ মিছিল করবে তৃণমূল।
কলকাতা, পুরুলিয়ার পর শুক্রবার শিলিগুড়িতে পথে নেমে কেন্দ্র-বিরোধিতায় সোচ্চার হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শিলিগুড়ির প্রধাননগর থেকে বাঘাযতীন পার্ক পর্যন্ত মিছিল করেন মমতা। এনআরসি নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরাই দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করছেন বলে অভিযোগ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এ প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী-কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দু’জন দু’রকম কথা বলছেন। পরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদও ভিন্ন কথা বলছেন। ওঁদের নিজেদের কথাতেই কোনও মিল নেই। সকালে একরকম কথা বলেন, বিকেলে অন্য কথা বলেন।’
এরই পাশাপাশি কেন্দ্র-বিরোধী আন্দোলন করায় দেশের যুবসামাজের উপর আক্রমণ চালানোর অভিযোগ এনেছেন মমতা। নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসির বিরুদ্ধে পথে নামায় পড়ুয়াদের উপর পুলিশ অত্যাচার চালিয়েছে বলেও অভিযোগ তাঁর। এই প্রসঙ্গে তৃণমূলনেত্রী বলেন, ‘পড়ুয়াদের আন্দোলনে বাধা দিচ্ছে কেন্দ্র। পড়ুয়াদের হস্টেল বন্ধ করে দিয়ে তাঁদের হুমকি দিয়ে আন্দোলন বন্ধের চেষ্টা হচ্ছে।’
রাজনৈতিক দলগুলিকেও তাঁদের দায়িত্ব পালনে কেন্দ্র বাধা দিচ্ছে বলে এদিন অভিযোগ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে লখনউ বিমানবন্দরের ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। সম্প্রতি লখনউয়ে গিয়ে বাধার মুখে পড়েন তৃণমূল প্রতিনিধিরা। তৃণমূল প্রতিনিধি দলকে বিমানবন্দর থেকে বেরোতেই দেওয়া হয়নি। ১৪৪ ধারা জারির নাম করে বিমানবন্দরেই তাঁদের আটকে দেওয়া হয়। কেন্দ্রকে কাঠগড়ায় তুলে মমতা বলেন, ‘কলকাতায় এসে সভা-মিছিল করে যাচ্ছেন বিজেপির নেতারা। কাউকে কোথাও বাধা দেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু বিজেপি শাসিত রাজ্যে কোনও কর্মসূচিতে গেলে তৃণমূলকে বাধা দেওয়া হচ্ছে।’
নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসির প্রতিবাদে উত্তর প্রদেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। কেন্দ্র বিরোধী আন্দোলনে নেমে উত্তরপ্রদেশে পুলিশের গুলিতে ২৩ জনের মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ। নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার পথে বাধার মুখে পড়েন তৃণমূল নেতারা।
আগামী ২২ জানুয়ারি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে পাহাড়েও প্রতিবাদ কর্মসূচি হবে বলে জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই কর্মসূচিতে পাহাড়বাসীকে একযোগে পথে নামতে অনুরোধ করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। একইসঙ্গে আগামী ৯ জানুয়ারি বারাসত থেকে মধ্যমগ্রাম পর্যন্তও প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী।
কেন্দ্রকে হুঁশিয়ারি দিয়ে এদিন ফের এরাজ্যে নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি কার্যকর করা হবে না বলে আবার জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
Be the first to comment