ঠিকাদারদের সঙ্গে শাসক দলের নেতা ও সরকারি আধিকারিকদের সাঁট নিয়ে তীব্র তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিরোধীরা প্রায়ই অভিযোগ করেন, সরকারি কাজের মান খারাপের কারণ তৃণমূলের নেতাদের ভাগ না দিয়ে ঠিকাদাররা কাজ করতে পারেন না। বিরোধীদের সেই অভিযোগে কার্যত সিলমোহর দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
বুধবার বাঁকুড়ার প্রশাসনিক সভায় সরকারি অফিসার থেকে জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে ক্ষুব্ধ মমতা বলেন, কন্ট্রাক্টরদের কাজ দিয়ে ভাগ চাওয়া বন্ধ করো।
গত মাসেই বাঁকুড়ার সারেঙ্গায় একটি আস্ত জলের ট্যাঙ্ক ভেঙে পড়ার ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল। জানা গিয়েছিল, দু’বছর আগে তৈরি হয়েছিল ওই ট্যাঙ্কটি। প্রশ্ন ওঠে, তাহলে কী দিয়ে তৈরি হয়েছিল ওই ট্যাঙ্ক যে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল? এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জলের ট্যাঙ্ক ভেঙে পড়ছে। কোন কন্ট্রাক্টর করছে শুনি! কন্ট্রাক্টরদের কন্ট্রোল করো। এরপরই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কন্ট্রাক্টরদের কাজ দিয়ে ভাগ নেওয়া বন্ধ করো।
পাশাপাশি জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের কাজ নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠকে ব্যাপক ক্ষোভপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। সরাসরি বলেন, সব কাজ জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের জন্য আটকে আছে। ওখানকার অফিসাররা কি ঘুমোয়? সেইসঙ্গে মুখ্যসচিব রাজীব সিনহার উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর আর ভূমি রাজস্ব দফতরে ঘুঘুর বাসা তৈরি হয়েছে। ওই ঘুঘুর বাসা ভাঙতে হবে। দরকার হলে রাজ্যের দুর্নীতি দমন শাখাকে নামিয়ে দাও। সব সোজা হয়ে যাবে।
বাঁকুড়ার খাতরা ব্লকের কাজ নিয়ে ব্যপক অসন্তোষ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ওখানকার মানুষের এত ক্ষোভ কেন? হাসপাতাল হয়েছে, ব্লাড ব্যাঙ্ক হয়েছে, দু’টাকা কিলো দরে চাল পায় সবাই। তারপরেও এত ক্ষোভ কেন? জনপ্রতিনিধিরা কি এলাকায় যান না?
বিধায়ক জ্যোৎস্না মান্ডিকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তুমি রোজ এলাকায় যাবে। প্রশাসনিক বৈঠকের মাঝেই মুখ্যমন্ত্রীকে স্বগতোক্তি করতে শোনা যায়, কোনও দায়বদ্ধতা নেই। তাই আজকে এই অবস্থা।
গতকাল বুথস্তরের কর্মীদের নিয়ে সভা করার পর এদিন প্রশাসনিক বৈঠকে সরকারি আধিকারিক থেকে বিধায়ক, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিদের দাঁড় করিয়ে, ব্লক ধরে ধরে কাজের খতিয়ান নেন মুখ্যমন্ত্রী। কিছু কিছু জায়গায় ভাল কাজ হওয়ার প্রশংশা করেন। কিন্তু অধিকাংশ জনপ্রতিনিধি আর সরকারি আধিকারিককে শুনতে হল ধমক।
এদিন কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী?
শুনুন!
Be the first to comment