চাকরির দাবিতে সরস্বতী পুজোর দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি সংলগ্ন আদিগঙ্গায় ঝাঁপ দিয়েছিলেন পার্শ্বশিক্ষকরা। সঙ্গে ছিলেন অনুমোদন নেই এমন মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষিকারাও। এর জেরে আলিপুর সেন্ট্রাল জেলের পাশের রাস্তায় অর্থাৎ আদিগঙ্গার পারে পুলিশ পিকেট বসেছে। আলিপুর সেন্ট্রাল জেলের বিপরীত দিকেই আদিগঙ্গার পারে মমতা মন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি। এই বাড়ির ঠিক উল্টো দিকের রাস্তায় আলিপুর সেন্ট্রাল জেল সংলগ্ন রাস্তায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। আদিগঙ্গায় নামানো হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। ঘটনার দিনই এই বিক্ষোভকারীদের আদিগঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে প্রতিবাদের ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছিল, মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি ও পার্শ্ববর্তী এলাকার নিরাপত্তা নিয়ে।
তবে কী ভাবে পুলিশের নজর এড়িয়ে আন্দোলনকারীরা আলিপুর সেন্ট্রাল জেলের পাশের রাস্তায় এলো এবং গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির দিকে সাঁতার দিয়ে ওঠার চেষ্টা করতে পারলো তাই নিয়ে প্রশ্ন । এরপরই মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির পাশের রাস্তায় ও আদিগঙ্গায় বাড়ানো হলো নিরাপত্তা।
ঘটনার দিন বিক্ষোভকারীরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে পৌঁছে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু কলকাতা পুলিশ ও কলকাতা পুলিশের কমিশনার সৌমেন মিত্র ঘটনার সময় আলিপুর সেন্ট্রাল জেলের পাশে আদিগঙ্গার পারে পৌঁছে যান। শেষে বিক্ষোভকারীদের আদিগঙ্গার নোংরা, ময়লা জল থেকে তুলে শেষ পর্যন্ত আলিপুর থানা ৭ গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তাঁদের জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়। আন্দোলনকারীদের মধ্যে রুনু ভক্ত নামের এক মহিলাও ছিলেন। আদিগঙ্গার যে পারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি তার উল্টো দিক থেকে আদিগঙ্গায় নেমে আদিগঙ্গা টপকে সাঁতার কেটে উঠে গিয়ে বিক্ষোভকারীরা নিজেদের চাকরির দাবি মুখ্যমন্ত্রীকে জানাতে চেষ্টা চালিয়েছিলেন মঙ্গলবার ।
এদিকে ঘটনার দিনই প্রদেশ কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী আন্দোলনকারীদের প্রতি তাঁর সমর্থন জানিয়েছিলেন। বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এই ঘটনায় মন্তব্য করে রাজ্য সরকারের সমালোচনা করে বলেছিলেন, শিক্ষকদের কোথায় নামতে হয়েছে এই সরকারের জন্য।
তবে তৃণমূল মহাসচিব ও রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এভাবে প্রতিবাদকে তীব্র সমালোচনা করে বলেছিলেন, এভাবে আদিগঙ্গা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি যাওয়া মোটেই কাঙ্খিত নয়। প্রসঙ্গত কিছুদিন আগেই একই দাবিতে বিধানসভা অধিবেশন বসার দিনই বিধানসভার গেটের সামনে পৌঁছে যান আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষিকারা। মুখ্যমন্ত্রী যে গেট দিয়ে বিধানসভায় প্রবেশ করেন সেই গেটের কাছেও বিক্ষোভকারীরা সেদিন পৌঁছে গিয়েছিল। সেদিনও প্রশ্ন উঠেছিল পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে। কেননা মুখ্যমন্ত্রীর মতো একজন ভিআইপি-র নিরাপত্তায় কী ভাবে এতো ঢিলেঢালা পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে! মঙ্গলবারের আদিগঙ্গায় ঝাঁপিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দাবি জানাতে যাওয়ার ঘটনায় শেষ পর্যন্ত পুলিশ প্রশাসন নড়েচড়ে বসল, যার ফলে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি সংলগ্ন আদিগঙ্গার দুপাশ ও গঙ্গার জলে বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হলো।
Be the first to comment