হুগলির সভার শুরুতেই প্রধানমন্ত্রীকে সরাসরি আক্রমণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাদ গেলেন না দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও। একদম চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করেছেন তিনি। কখনও নাম করে কখনও নাম না করে তুলোধনা করেছেন। প্রশ্ন করেন, BJP-র দলে মহিলা সুরক্ষিত? তিনি বলেন, ‘ বাংলার মা বোনেরা সুরক্ষিত। তাই হিংসা করে চলে গিয়েছেন।’
দৃশ্যতই ক্ষুব্ধ মমতার কথায়, ‘আমি রাজনীতি করি, অনেক মার খেয়েছি। গায়ের জোর দেখাচ্ছে। কোথায় আঘাত করছে ভেবে দেখুন। BJP-র আমার উপর খুব রাগ। কিন্তু, মা বোনের অসস্মান করতে পারেন? আমার বাড়িতে ঢুকে একটা বাচ্চা মেয়ে, ঘরের বউ। তাঁকে কয়লা চোর বলছে। আর কয়লা চোরদের নিয়ে নিজে করে বেরোচ্ছেন। আপনারই তোলাবাজ। আপনাদের সারা গায়ে ময়লা লেগে আছে।’ নোটবন্দির টাকা কোথায় গেল সেই প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রীর থেকে জবাবও চেয়েছেন মমতা।
তাঁর কথায়, ‘তৃণমূল তোলাবাজ হলে আপনারা দাঙ্গাবাজ, ধান্দাবাজ।’ সাফ বলেছেন, ‘গরিবরা পাঁচ টাকা খেলে হয় কাটমানি। আর আপনারা কোটি টাকা খান তার বেলা!’
মঙ্গলবারই CBI আসার আগেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে পৌঁছেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কয়লা পাচার মামলার তদন্তে তৃণমূল সাংসদ অভিষেকের স্ত্রী রুজিরাকে জেরা করতে সকালেই আসার কথা ছিল CBI-এর। তার আগেই নাটকীয় মোড়। অভিষেকের বাড়ি ‘শান্তিনিকেতন’ পৌঁছন মমতা। মিনিট দশেক থাকার পরে তিনি বেরিয়ে আসেন। তাৎপর্যপূর্ণভাবে তার কিছুক্ষণের মধ্যে CBI টিম আসে। তারপর থেকে চুপ ছিলেন তিনি। মুখ খুললেন এদিনের সভায়।
তিনি বলেন, ‘কজনকে গ্রেফতার করবে, জেল ফুটো হয়ে বেরিয়ে আসবে। ধামসা-মাদল থেকে বেরিয়ে আসবে। ক’জনকে গ্রেফতার করবে কর। তৃণমূলের সব কর্মীকে গ্রেফতার করতে হবে।’ নরেন্দ্র মোদীর রেল প্রকল্পের উদ্বোধন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কটাক্ষ, ‘এই সব প্রকল্প আমি রেলমন্ত্রী থাকাকালীনই করে দিয়ে গিয়েছি। এখন ফিতে কাটছে। দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে এত মিথ্যে কথা বলেন! আমি প্রধানমন্ত্রীকে কিছু বলতে চাই না। কারণ আমি চেয়ারটা সম্মান করি। তিনি আজ আছেন, কাল চলে যাবেন।’
কটাক্ষের সুরে তিনি বলেন, ‘এক নেতা হচ্ছে হোঁদল কুতকুত। আরেজন নেতা হচ্ছেন কিম্ভূত কিমাকার।’ শুরুতেই টলি তারকাদের যোগদান প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেছেন, ‘খেলা হবে। এবারও খেলা হবে। আমি থাকব গোলরক্ষক। একটাও গোল করতে পারবেন না।’ বক্তব্যের শেষেও মমতার মুখে উঠে আসে খেলা হবে প্রসঙ্গ। BJP-র বিরুদ্ধে জননেত্রীর অভিযোগ, কয়লা মাফিয়াদের হোটেল ভাড়া নিচ্ছে তারা। অন্যদিকে, লোকসভা ভোটে খারাপ ফলের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘কোথাও কোথাও আমাদের ভুল ত্রুটি হয়েছিল। আমরা সংশোধন করেছি।’
মমতা বলেন, ‘১৫ লাখ টাকা করে দেবে বলেছিল। ক’জন পেয়েছেন সেই টাকা? আর এখন টাকা দিয়ে এলে কী করবেন? বাংলাকে বাইরে থেকে গুন্ডা এনে ভরিয়ে দেবে। রাজ্যটাকে বিক্রি করে দেবে। আপনারা বলুন, কোনটা চাই। ভাল করে শুনে রাখুন, গুজরাট বাংলা শাসন করবে না। বাংলাই বাংলা শাসন করবে। এক একটা লুটেরা।’ প্রধানমন্ত্রীর নাম না করে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘ট্রাম্পের থেকে খারাপ হাল হবে।’
Be the first to comment