শিশুমৃত্যুর কারণ কী? দ্রুত অনুসন্ধানের নির্দেশ মমতার

Spread the love

 করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের মাঝেই রাজ্যে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে শিশুদের জ্বর। জেলায় জেলায় জ্বরের প্রকোপে অসুস্থ খুদেরা। জ্বরে শিশু মৃত্যুতে বাড়ছে আতঙ্ক। উপরন্তু উপসর্গে করোনার সঙ্গে মিল থাকায় রোগ নির্ধারণেও তৈরি হচ্ছে সমস্যা। এখনও পর্যন্ত উত্তরবঙ্গেই জ্বরের প্রকোপ সব থেকে বেশি। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমকে বিষয়টি ভালোভাবে খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দিয়েছেন উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতা থেকে আরও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের দলকে উত্তরবঙ্গে পাঠানোর নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর।

শিশু মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে দ্রুত পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন ও উত্তরবঙ্গের সরকারি ল্যাবকে এই জ্বরের ভাইরাসের চরিত্র কী? করোনার সঙ্গে এই ভাইরাসের কোনও সম্পর্ক আছে কিনা তা পরীক্ষা করে দ্রুত রিপোর্ট জমা করার কথা বলা হয়েছে। ইতিমধ্যেই এই জ্বরে চিকিৎসা কী ভাবে করতে হবে, তা নিয়ে একটি SOP তৈরি করেছে রাজ্য স্বাস্থ্যদফতর। তা পাঠানো হচ্ছে রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালগুলিতে।

শুক্রবারও নতুন করে দুই শিশু মৃত্যুর খবর মিলেছে। মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে জ্বরে আক্রান্ত দুই শিশুর। পরিসংখ্যান বলছে, গত ৪৮ ঘণ্টায় এই নিয়ে মালদায় মোট পাঁচজন শিশুর মৃত্যু হলো। জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়িতেও বহু শিশু জ্বরের প্রকোপে অসুস্থ। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এদিন কলকাতা থেকে পাঁচ জন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের একটি দল উত্তরবঙ্গে যান। এই দলে রয়েছেন ডা. রাজা রায়, ডা. পল্লব ভট্টাচার্য, ডা. বিকাশচন্দ্র মণ্ডল, ডা. মিহির সরকার ও ডা. দীপ্তকান্তি মুখোপাধ্যায়। শুক্রবার শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল পরিদর্শন করেন তারা। জলপাইগুড়ি হাসপাতালেও যাওয়ার কথা রয়েছে তাদের।

এদিন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল ও শিলিগুড়ি হাসপাতালে বেড বাড়ানোর কথা বলেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তবে রেসপিরেটরি ভাইরাসের জন্য শিশুরা জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিভাগের উত্তরবঙ্গ ওএসডি ডাঃ সুশান্ত রায়। শিশুদের চিকিৎসা কীভাবে হচ্ছে তা নিয়ে খোঁজ নেন বিশেষজ্ঞরা। হাসপাতালে এছাড়া বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন তারা।

এছাড়া, এগরা হাসপাতালেও ৮০ জন শিশু অজানা জ্বরে ভর্তি।। চিকিৎসকদের কথায়, সাধারণত প্রতিবছর সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে শিশুরা ভাইরাল জ্বরে বেশি আক্রান্ত হয় । এই জ্বরে আক্রান্ত হলে বাচ্চাদের নাক দিয়ে জলের মতো সর্দি ঝরতে শুরু করে। এরসঙ্গে প্রচন্ড জ্বর দু’এক দিনের মধ্যে শ্বাস কষ্ট শুরু হয় শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায় । তবে চিকিৎসকদের কথায়, শুরুতে চিকিৎসা হলে বাচ্চা তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবে । পরিসংখ্যান বলছে, এগরা মহকুমা হাসপাতালের SNCU তে ৩ মাস থেকে ৫ বছরের শিশুরা, ৮ থেকে ১০ বছরের শিশুরা, জ্বর-সর্দি-কাশির মতো উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হয়েছে প্রায় ৮০ জন বাচ্চা।

এদিকে, ১ সেপ্টেম্বর থেকে এখনও পর্যন্ত ৩০০ শিশু ভর্তি রয়েছে জলপাইগুড়ির একাধিক হাসপাতালে। ২৪ ঘণ্টায় ১০৫ জন শিশু চিকিৎসাধীন রয়েছে। কলকাতায় পাঠানো দশজনের সোয়াব টেস্টে তিনজন শিশুর RS ভাইরাস এবং আরও তিনজন শিশুর ইনফ্লুয়েঞ্জা-বি ভাইরাস মিলেছে। জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ভাইরাল জ্বরে আক্রান্ত ১০ জন শিশুর সোয়াব নমুনা পরীক্ষা করে এই রিপোর্ট দিয়েছে স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*