রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ যে বাধবে, কেন্দ্র তা জানত। তা সত্ত্বেও ইউক্রেনে পড়তে যাওয়া ভারতীয় ছাত্র-ছাত্রীদের কেন তিন মাস আগে দেশে ফেরানো হল না? নির্বাচনী প্রচারে উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে রওনা আগে, এ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ বিষয়ে সাংবাদিকরা তাঁকে প্রশ্ন করলে মমতা বলেন, ‘ইউক্রেনে আটকে পড়া ভারতীয় পড়ুয়াদের ফেরানোর জন্য এত প্রচারের কী দরকার। এটা তো কেন্দ্রের দায়িত্ব। তিন মাস আগেই ফিরিয়ে আনা উচিত ছিল।’ কেন্দ্রের ‘অপারেশন গঙ্গা’ নিয়েই এই মন্তব্য করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। এয়ার ইন্ডিয়ার বিশেষ বিমানে ইউক্রেনে আটকে পড়া ভারতীয়দের ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করেছে কেন্দ্র। এরই নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন গঙ্গা’। গত ২৪ ঘণ্টায় অপারেশন গঙ্গা-র আওতায় ৬টি উড়ানে প্রায় ১৪০০ পড়ুয়াকে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে ফেরানো হচ্ছে।
মমতার কথায়, ‘কেন্দ্র যদি ঠিক সময়ে ফেরানোর ব্যবস্থা করত, তা হলে আজ বাঙ্কারে শুয়ে ভারতীয় পড়ুয়াদের অসহায় ভাবে কাঁদতে হত না। প্রাণ হাতে ছুটতে হত না রোমানিয়ার বর্ডারে। খাবারের লাইনে দাঁড়িয়ে রুশ ক্ষেপণাস্ত্রে মরতে হত না।’মঙ্গলবারই ইউক্রেনের দ্বিতীয় জনবহুল শহর খারকিভে রুশ ক্ষেপণাস্ত্রে প্রাণ হারিয়েছেন ভারতীয় ছাত্র শেখরাপ্পা জ্ঞানগৌদার ওরফে। খারকিভ সিটি সেন্টারে খাবার কিনতে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন কর্নাটকের এই মেডিক্যাল ছাত্র। সেসময় সিটি সেন্টার লাগায়ো গভর্নর হাউসের কাছে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়লে, নিহত হন নবীন।
তবে, এই আন্তর্জাতিক ইস্যুতে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রকের সরাসরি সমালোচনার রাস্তায় হাঁটেননি মুখ্যমন্ত্রী। মমতার কথায়, ‘আমরা কোনও দেশের বিপক্ষে নই। যুদ্ধও চাই না। কোভিড, নোটবন্দির সঙ্গে যুদ্ধ করে মানুষ ক্লান্ত। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবও সাধারণ মানুষের উপর এসে পড়বে।’ তৃণমূল সুপ্রিমো মনে করেন, ভারত চাইলে শান্তির রাস্তায় ফেরাতে পারে।
বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত খবর আনুযায়ী, ইউক্রেনে প্রায় আট হাজার ভারতীয় নাগরিক আটকে রয়েছেন। তবে, কিভে যাঁরা আটকে পড়েছিলেন, তাঁদের ইতিমধ্যেই ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। খারকিভ-সহ অন্যত্র আটকে পড়া ভারতীয়দেরও দ্রুত দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।