ম্যাডি বাবুর দিন শেষ, বিদায় ঘন্টা বাজছে, পরিবর্তন আসছেঃ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

Spread the love

২০১৯- এর লোকসভা নির্বাচনের দিন ঘোষণা এখন কেবলই কয়েকদিনের অপেক্ষা। তার আগে প্রত্যেক রাজনৈতিক দলই নিজেদের দলীয় কর্মীদের উজ্জীবিত করছেন। সোমবার ২৫শে ফেব্রুয়ারি তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বর্ধিত কোর কমিটির মিটিং ডেকেছিলেন কলকাতার নজরুল মঞ্চে। এই আলোচনা সভায় নেত্রী স্পষ্ট বার্তা দিলেন কিভাবে লড়তে হবে বিজেপির বিরুদ্ধে।

এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ম্যাডি বাবুদের ঔদ্ধত্য ও গাদ্দারদের দিন শেষ, বিজেপির বিদায় ঘন্টা বাজছে, পরিবর্তন আসছে। বিজেপির সময়কালে ভারতীয় সংসদীয় গনতন্ত্র ব্যবস্থা বিপদে, এদের থেকে মুক্ত হতে হবে। এদিন দলীয় নেতা থেকে শুরু পঞ্চায়েত সদস্য সকলকে উদ্দেশ্য করে তৃণমূল নেত্রী প্রশ্ন করেন আচ্ছা আপনারা কেউ কি ভয় পেয়েছেন? বিজেপি এজেন্সী দিয়ে ভয় দেখায়। কে কে ভয় পেয়েছেন হাত তুলুন। এভাবেই তিনি দলীয় কর্মীদের উজ্জীবিত করেন তিনি। তিনি স্পষ্ট বলেন ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট সরকারকে যদি আমরা নাড়াতে পারি তাহলে মাত্র ৫ বছরের মোদী সরকারকে আমরা অবশ্যই পরিবর্তন করতে পারবো।

সিপিএম কংগ্রেসের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, সিপিএম কংগ্রেস কি করবে ওরা তো জগাই মাধাই দুইভাই, আর একজন হলো বিদাই। এবার এরা সকলেই বিদায় নেবে। তিনি স্লোগান তোলেন পরিবর্তন চাই-ই চাই, মোদী অমিত শাহের বিদায় চাই,বিজেপি হঠাও দেশ বাঁচাও।

পুলওয়ামার শহীদদের প্রতি শোক ও তাঁদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মোদীবাবু কোথায় ছিলেন? তিনি তো জানতেন কারণ ইন্টালিজেন্স তো আগে থেকেই বার্তা দিয়েছিলেন তা সত্ত্বেও এয়ার লিফ্টিং বা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলনা কেন? এই প্রথম কোনো রাজনৈতিক নেতা বা নেত্রী সরাসরি নরেন্দ্র মোদীকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বললেন যে পুলওয়ামার ঘটনার জন্য শুধু তিনি দায়ীই নন, বরং এ ঘটনার কথা তিনি আগে থেকেই জানতেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন যে জওয়ানদের রক্ত দিয়ে রাজনীতি হবে সেটা আমি কোনো মতেই সহ্য করতে পারবনা। সার্জিক্যাল স্ট্রাইক সহ একাধিক বিষয়ে মোদীকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন দেশে প্রায় যুদ্ধ চলছে আর উনি শান্তি পুরষ্কার নিচ্ছেন। তিনি বলেন কত বড়ো শান্তি সুদর্শনচক্র, নন্দীগ্রামের ১০ জন কোথায় গেলেন? এই অত্যাচারী সরকারের বিরুদ্ধে সকলকে জাগতে হবে, আমাদের পরিবর্তন চাই। এখন সরকার চলছে দুই ভাইকে নিয়ে জগাই আর মাধাই, দুজনেই দাঙ্গা করতে অভ্যস্ত। আমাদের যুবকদের রক্তে রাঙা ওদের হাত, আমরাই ভুল করেছি ওদের হাতে দেশের ভার তুলে দিয়ে। আশ্চর্য হলো একটা লোকও এদের প্রতিবাদ করেনা, তাই এতো এদের স্পর্ধা। আমাদের প্রতি ওরা যাই করুক আমরা কিন্তু ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে এর জবাব দেবো।

তিনি আরোও বলেন সম্প্রীত, ঐক্য, সংহতি এই সরকারের আমলে সবই বিপন্ন। রাফেল থেকে আপেল সব ক্ষেত্রেই দুর্নীতির চূড়ান্ত শিখরে পৌঁছে গেছে এই সরকার। আর এদের যদি সরাতে না পরি তাহলে কিসের জন্য এতদিন তৃণমূল কংগ্রেস করলাম? ওরা সবসময় আমাদের নকল করে স্বাস্থ্যসাথীকে নকল করে ওরা করেছে আয়ুষ্মান ভারত। আমার চাইনা ওদের টাকা, এতো নৈতিক অধঃপতন এদের, আমাদের সকলকে এদের বিরুদ্ধে জোট বাঁধতে হবে, লড়াই করতে হবে।

সর্বশেষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ৪২শে ৪২ই আমার চাই। এটা কেবল কথার কথাই নেই এর মধ্যে রয়েছে যথেষ্ট সারবত্তা। আমরা ৪২ টা আসন পেতেই সক্ষম। ইভিএম জালিয়াতি অনেকে করবে, এই নিয়ে একটি কমিটিও করেন তিনি। এই কমিটির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সৌগত রায়, দিনেশ ত্রিবেদীকে।সবশেষে তিনি বলেন এরা প্রচুর টাকা ছড়াবে আপনার কিন্তু কোনো রকম প্রলোভনে পা দেবেননা। লড়াইয়ে থাকুন, পরিবর্তন আসবেই এ আমার দৃঢ় বিশ্বাস। এই বলেই দলীয় কর্মীদের উজ্জীবিত করলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*