যত বেশি জয় আসবে, তত বেশি করে নম্র হতে হবে। সোমবার রাজ্যের চার পুরনিগমে তৃণমূলের জয় জয়কারের পর এমনই বার্তা দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন শিলিগুড়িতে যাওয়ার আগে কলকাতা বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এবার তাঁর সরকারের প্রধান লক্ষ্য শিল্পায়ন। একইসঙ্গে কর্মসংস্থান বাড়ানোও তৃণমূল সরকারের লক্ষ্য বলে জানান তিনি। মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়ের কথায়, “আমি মানুষের কাছে খুবই কৃতজ্ঞ। বিধাননগর, শিলিগুড়ি, আসানসোল, চন্দননগর, কলকাতা কর্পোরেশনে মানুষ পাশে থেকেছেন। আগামিদিনে আরও ১০০র উপরে পুরসভার ভোট আছে। সাধারণ মানুষের পরিষেবা, বাংলার সবুজায়ন, শিল্প সমৃদ্ধ করা, মায়ের সম্মান, ছাত্র যুবদের সম্মান, শ্রমিক কৃষকের ভালবাসা, সর্বধর্ম সমন্বয়ের মধ্যে দিয়ে সংস্কৃতি সম্প্রীতির মধ্যে দিয়ে আমরা করে চলেছি এবং করে যাব। যত জিতব আরও তত বেশি নম্র হতে হবে। আরও বেশি করে মানুষের উপর বিশ্বাস রাখতে হবে। আগামিদিন আমার ডেস্টিনেশন ইন্ডাস্ট্রি। কাজের সুযোগ বাড়ানো।”
একইসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার্তা দেন, জনগনের পরিষেবা পুরনিগম, পুরসভা দেবে। সরকারের অনেক কাজ। মঙ্গলবার থেকে আবার দুয়ারে সরকার শুরু হচ্ছে। আমাদের সমস্ত সরকারি প্রকল্প যেন ঠিকমতো চলে তা সবাইকে দেখতে হবে। কোভিড কমে গেলেও সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে। এই জয় মানুষের উদ্দেশে উৎসর্গ করছি। আজ শিলিগুড়ি যাচ্ছি। কোচবিহারে অনুষ্ঠান আছে। ট্রাইবাল ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিলের মিটিংও আছে। আজ পঞ্চানন বর্মার জন্মদিন। ওখানে পৌঁছে তাঁর মূর্তিতে মাল্যদান করব।
শিলিগুড়ি পুরনিগমের মোট ৪৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩৭টিতে জয়ী হয়েছে তৃণমূল। বিজেপি পেয়েছে পাঁচটি। বামেরা ৪টি দখলে রেখেছে, কংগ্রেসও একটি আসনে জয়ী হয়েছে। এই পুরনিগমে উল্লেখযোগ্য জয় তৃণমূলের প্রার্থী গৌতম দেবের। তিনিই এই পুরনিগমের আগামী মেয়র। সোমবার কলকাতাই সে কথা জানিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
অন্যদিকে বিধাননগর পুরনিগমের ৪১টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩৯টিতে জয়ী হয়েছে তৃণমূল। একটি পেয়েছে কংগ্রেস, একটি নির্দল। এখানকার মেয়র কে তা নিয়ে ইতিমধ্যেই জোর জল্পনা। কারণ একদিকে কৃষ্ণা চক্রবর্তী রয়েছেন। যিনি এর আগে মেয়র ছিলেন। পাশাপাশি রয়েছেন সব্যসাচী দত্তও। যিনি কৃষ্ণা মেয়র হওয়ার আগে সে দায়িত্ব সামলেছেন। দু’জনই এই পদে পরীক্ষিত। কোন নামে সিলমোহর পড়ে, সেদিকেই নজর সকলের।
অন্যদিকে জিতেন্দ্র তিওয়ারির জাদু কাজ করেনি আসানসোল পুরনিগমে। সেখানে ১০৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৯১টিতে ঘাসফুলের রমরমা। বিজেপির পেয়েছে মাত্র সাতটি। বাকি দু’টি বামেরা, তিনটি কংগ্রেস এবং তিনটি নির্দল। ভোটের আগের রাত থেকে দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়েছে এই এলাকা। বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল নিজে মাটি কামড়ে পড়ে থেকেছেন সেখানে। কিন্তু ইভিএমে তার কোনও প্রতিফলনই নজরে আসেনি সোমবার। চন্দননগরের ৩৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে ভোট হয়েছে ৩২টিতে। একটি ওয়ার্ডের প্রার্থী মারা যাওয়ার কারণে ভোট স্থগিত হয়। সেখানেও সবুজ ঝড়। ৩১টিতে জয়ী হয়েছে তৃণমূল, একটি পেয়েছে বামেরা।
Be the first to comment