বুধবারও তুমুল হট্টগোল বিধানসভায়। এদিনও বিধানসভায় বিক্ষোভ দেখান বিজেপি বিধায়করা। দুই বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায় ও মিহির গোস্বামীর সাসপেনশন প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। গোটা পরিস্থিতি যখন উত্তাল, তারই মাঝে বলতে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যপালের প্রারম্ভিক ভাষণের আগে বিজেপির সোমবারের বিক্ষোভ প্রদর্শন প্রসঙ্গে কথা বলছিলেন তিনি। সেসময় আরও চিৎকার চেঁচামেচি করতে থাকেন বিজেপি বিধায়করা। রাজ্যপালের ভাষণের ধন্যবাদ জ্ঞাপন ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিজেপি বিধায়কদের হেরেও লজ্জা নেই। তাঁরা বিধানসভার সংস্কৃতিকে নষ্ট করছেন। সব থেকে উল্লেখযোগ্য, এদিন মুখ্যমন্ত্রী যখন রাজ্যপালের ভাষণের ওপর আলোচনা করছিলেন, সে সময় বিজেপি বিধায়করা সাসপেনশন প্রত্যাহারের দাবিতে ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। এই দুটি ঘটনাই এদিন বিধানসভায় সমান্তরালভাবে এগিয়েছে।
বুধবার বিধানসভার অধিবেশনে সকাল থেকেই উত্তাল হয়ে ওঠে। ৭ তারিখে বাজেট অধিবেশনে রাজ্যপালের সামনে বিজেপির বিক্ষোভ প্রদর্শনের রেশ পড়ে এদিনের অধিবেশনের শুরুতেও। পুরুলিয়ার বিজেপি বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায় ও নাটাবাড়ির মিহির গোস্বামীকে চলতি বিধানসভা অধিবেশনে সাসপেন্ড করা হয়। অভিযোগ, ৭ তারিখ তাঁরা একেবারে সামনে থেকে বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
এদিন সকালে অধিবেশনের প্রথম পর্যায়ে বিধানসভায় শাস্তির প্রস্তাব আনেন পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ ছিল, ৭ তারিখ বাজেট অধিবেশন কক্ষে কাজে বিঘ্ন ঘটিয়েছিলেন সুদীপ মুখোপাধ্যায় ও মিহির গোস্বামী। এরপরই স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় ধ্বনি ভোটের মাধ্যমে দুজনকে সাসপেন্ড করেন।
বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের শুরু থেকেই বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিজেপি বিধায়করা। দুই বিজেপি বিধায়কের সাসপেনশন প্রত্যাহারের দাবিতে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বাদানুবাদ হয় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। এরপরও ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিজেপি বিধায়করা। গোটা পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তুমুল হট্টগোল হতে থাকে অধিবেশন কক্ষে।
এরই মধ্যে ভাষণ দিতে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “বিধানসভার অধিবেশন কক্ষের সংস্কৃতি নষ্ট করা চেষ্টা করছেন বিজেপি বিধায়করা। বিধায়করা তাঁদের নিজেদের জায়গাতেই হেরে গিয়েছেন। হেরে গিয়েও তাঁদের লজ্জা নেই।” বিজেপি বিধায়কদের সাসপেনশন সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “রাজ্য সভায় আমাদের বহু সদস্যকে সাসপেন্ড করে রেখেছে। যেখানে একটা ভোটও ম্যাটার করে। দিল্লি এক আর বাংলায় আরেক? আমাদের সাংসদদের সাসপেন্ড করেছে , তবে বাংলা কেন ব্যতিক্রম হবে?”
মুখ্যমন্ত্রী যখন কথাগুলি বলছিলেন, তখনও ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বিজেপি বিধায়করা। সাসপেন্ড হওয়া দুই বিজেপি বিধায়ক অবশ্য এ বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। তাঁরা জানিয়েছেন, বিরোধী দলনেতার সঙ্গে আলোচনা করেই তাঁরা তাঁদের পরবর্তী পদক্ষেপ স্পষ্ট করবেন।
Be the first to comment