দেউচা পাচামিকে কেন্দ্র করে রাজ্যের শিল্পবিমুখ ভাবমূর্তি বদল করতে চাইছে মমতার সরকার। সাম্প্রতিক কালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে একাধিকবার শোনা গিয়েছে, এখন তাঁর লক্ষ্য রাজ্যে আরও শিল্প ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। আর মমতার এই স্বপ্ন পূরণ করতে পারে দেউচা পাচামির খোলামুখ খনি প্রকল্প। জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রেও তাই যথেষ্ট সাবধানী মমতা। কিন্তু এর মধ্যেই বিরোধীরা বার বার ‘ভেটো’। সরাসরি শিল্পের বিরুদ্ধে কোনও দল কিছু না বললেও, জোর করে জমি অধিগ্রহণ যাতে না হয়, তার উপর নজর রাখছে বিরোধী দলগুলি। বিজেপি তো দেউচা পাঁচামি অভিযানের ভাবনাও করে ফেলেছে। এই নিয়েই বুধবার বিধানসভা থেকে একযোগে বিজেপি–বাম– কংগ্রেসকে আক্রমণ শানালেন মমতা। বললেন, “যখনই কোনও বিনিয়োগ – উদ্যোগ হয়, তখনই তিন মূর্তি হাজির হয়। খুব ভয়, দেউচা হলে আরও কুড়ি বছর যদি তৃণমূল থেকে যায়! এখনও ৫০ বছর থাকবে তৃণমূল।”
উল্লেখ্য, দেউচা পাঁচামিকে কেন্দ্র করে যাতে সিঙ্গুর নন্দীগ্রামের মতো অবস্থা না হয়, তা নিশ্চিত করতে সজাগ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দেউচার অধিবাসীদের পুনর্বাসন প্রকল্পের জন্য ভুড়ি ভুড়ি টাকা খরচ করেছেন। মমতার বক্তব্য, কারও থেকে জোর করে জমি নেওয়া হবে না। সবার আগে, রাজ্যের নিজস্ব জমি ব্যবহার করা হবে। তারপর, যাঁরা জমি দিতে ইচ্ছুক, কেবল তাঁদের থেকেই জমি নেওয়া হবে। কিন্তু রাজ্যের এই দেউচা পাঁচামি প্রকল্পের মধ্যে ‘নিয়ম ভাঙার’ গন্ধ পাচ্ছে বঙ্গ বিজেপি শিবির। বিজেপির বক্তব্য, তারা দেউচায় কয়লা খনির বিপক্ষে নয়। তবে তারা রাজ্য় সরকারকে দেউচা পাঁচামিতে কোনও দুর্নীতি করতে দেবে না।
বিষয়টি নিয়ে এর আগেও বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিল রাজ্যের শাসক দল। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ পদ্ম নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেছিলেন, বিজেপি দেউচা পাঁচামিতে উসকানি দেওয়ার কাজ করছে। বিষয়টিকে একটি ইস্যু করার চেষ্টা করছে বিজেপি। বুধবার বিধানসভায় অধিবেশন চলাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখেও ফের একবার সেই একইধরনের কথা শোনা গেল। সরাসরি কোনও রাজনৈতিক দলের নাম না নিলেও নিজের কথাতেই সাফ বুঝিয়ে দেন, দেউচায় বিরোধী দলগুলি যে ‘ব্যাঘাত’ দেওয়ার চেষ্টা করছে, তা কোনওভাবেই বরদাস্ত করবেন না তিনি।
Be the first to comment