জাতীয় ইস্যু নিয়ে সরব তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

Spread the love

তিনি অদৃষ্টে বিশ্বাসী ৷ হয়তো সেই কারণেই ১০ বছর পর ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে ৷ বৃহস্পতিবার পদ্মপুকুরের প্রচারমঞ্চ থেকে এমন কথা বলে কি সমালোচকদেরই জবাব দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়? এই প্রশ্ন উঠছেই ৷ কারণ, একুশের বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রাম আসন থেকে হারার পর উপনির্বাচনের প্রচারে এতটুকুও খামতি রাখতে রাজি নন মমতা ৷ যা দেখে অনেকের মত, আসলে চাপে রয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো ৷ সেই কারণেই ভবানীপুরের মতো ‘নিরাপদ’ আসনে দাঁড়িয়েও নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ৷ কিন্তু তিনি যে এই তত্ত্বের ধার দিয়েও যাচ্ছেন না, খানিকটা যেন সেটাই বোঝানোর চেষ্টা করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো ৷ আর হয়তো সেই কারণেই টেনে আনলেন ১০ বছর আগের প্রসঙ্গ ৷

উল্লেখ্য, ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গে পালাবদল হলেও সেবার কিন্তু প্রাথমিকভাবে বিধানসভা ভোটের প্রার্থী ছিলেন না মমতা ৷ তাঁর দল ক্ষমতায় আসার পর উপনির্বাচনে এই ভবানীপুর থেকেই লড়াই করেন তিনি ৷ সেই ভোটে জিতে নিশ্চিত করেন বিধানসভার সদস্যপদ। ১০ বছর পর আবারও উপনির্বাচনে ভবানীপুরের প্রার্থী হয়েছেন সেই মমতা ৷ তবে ভোটে জয়ী না হওয়া পর্যন্ত ‘ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি’ হল, একথা পুরোপুরি বলা সম্ভব নয় ৷ তাহলে কি মমতা নিজের জয়ের বিষয়ে ১০০ শতাংশ নিশ্চিত বলেই ‘ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি’র প্রসঙ্গ তুললেন?

একইসঙ্গে, তাঁর ভারত জয়ের স্বপ্নও ফের একবার প্রকাশ করলেন তিনি ৷ মমতার বার্তা, ভবানীপুর থেকেই ভারতকে ‘দেখবেন’ তিনি ৷ এদিন মমতা বলেন, ‘বি’ দিয়ে ভবানীপুর, ‘বি’ দিয়েই ভারত অর্থাৎ ভবানীপুরে ভোটে জিতেই তিনি যে ভারত জয়ের লক্ষ্যে এগোবেন, সেকথা আরও একবার স্পষ্ট করে দেন মমতা ৷

প্রসঙ্গত, চব্বিশের লোকসভা ভোটের আগে ত্রিপুরার বাইশের বিধানসভার ভোটকেই পাখির চোখ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস ৷ পশ্চিমবঙ্গে সরকার গঠনে হ্যাট্রিক করার পর উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যেও ক্ষমতা দখল করতে মরিয়া মমতার দল ৷ এদিকে, ইতিমধ্যেই ত্রিপুরায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে সে রাজ্যের সরকার ৷ যা আসন্ন পুজোর মরশুমেও অব্যাহত থাকবে ৷ ত্রিপুরার বিজেপি সরকারের এই পদক্ষেপকেই হাতিয়ার করেছেন মমতা ৷ গেরুয়াশিবিরকে নিশানা করে তাঁর বার্তা, যাঁরা তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে বলেন, তিনি নাকি বাংলায় দুর্গাপুজো, লক্ষ্মীপুজো করতে দেন না, আজ তাঁরাই ১৪৪ ধারা জারি করে দুর্গাপুজো, কালীপুজো বন্ধ করে দিচ্ছে ৷

এর পাশাপাশি, করোনা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ফের একবার বিজেপিশাসিত রাজ্য উত্তরপ্রদেশের সঙ্গে বাংলার তুলনা করেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ বুঝিয়ে দেন, বিজেপির থেকে তাঁদের সরকার ও প্রশাসন অনেক বেশি ভাল ও দক্ষ ৷ অর্থাৎ, উপলক্ষ্য বিধানসভা উপনির্বাচন হলেও তাঁর প্রধান লক্ষ্য যে দিল্লি দখল, সেকথা এদিনও ভালই বুঝিয়ে দিয়েছেন মমতা ৷ বোঝাতে চেয়েছেন, তিনি যদি ভবানীপুরে জিততে পারেন, তাহলে ভারতেও (জাতীয় স্তরে) জিততেও পারেন ৷ হয়তো তাঁর অদৃষ্টে এটাই লেখা রয়েছে ৷ আর সেই কারণেই আঞ্চলিক উপনির্বাচনের প্রচারমঞ্চ থেকেও কৃষক আন্দোলন-সহ একাধিক জাতীয় ইস্যু নিয়ে সরব হয়েছেন তৃণমূল নেত্রী ৷

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*