‘পুলিশের গাফিলতিতেই হাঁসখালি ও বগটুই কাণ্ড’, আধিকারিকদের ভর্ৎসনা ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রীর

Spread the love

হাঁসখালি ধর্ষণ এবং রামপুরহাটের বগটুই কাণ্ড নিয়ে তোলপাড় গোটা রাজ্য। এই দুই ঘটনায় তীব্র ক্ষোভপ্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর। আধিকারিকদের গাফিলতিতে দু’টি ঘটনা ঘটেছে বলেই দাবি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এ প্রসঙ্গে রানাঘাট এবং বীরভূমের পুলিশ আধিকারিকদের ভর্ৎসনা করেন তিনি। পুলিশের গাফিলতির দায় সরকার নেবে না বলেও সাফ জানান মুখ্যমন্ত্রী। চোখ, কান খোলা রেখে কাজের পরামর্শ রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের।

গত ৪ মে রাতে প্রেমিকের জন্মদিনের পার্টিতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয় হাঁসখালির নাবালিকা। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআই। হাঁসখালি কাণ্ড কীভাবে ঘটল, নবান্নে বুধবারের জরুরি বৈঠকে সে প্রসঙ্গে রানাঘাটের পুলিশ সুপারকে প্রশ্ন করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “হাঁসখালির ঘটনা কীভাবে ঘটল? কেন খবর নেওয়া হয়নি? কেন দেরিতে খবর পেল পুলিশ? পুলিশের গাফিলতিতে কেন সরকার ভুগবে? মন্ত্রীদের সোর্স কাজে লাগাতে হবে। হাঁসখালির নির্যাতিতার পরিবার পুলিশকে এক কথা বলছে, আবার সিবিআইকে আরেক বয়ান দিচ্ছে কেন?” হাঁসখালি কাণ্ডের পরই ধানতলাতেও ধর্ষণের অভিযোগ আসে। দুই বিজেপি নেতার কথোপকথন ভাইরাল হয়ে যায়। ধানতলায় ধর্ষণের ঘটনার সত্যতা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। সে কারণে পুলিশকে আরও সতর্ক হতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপি ইচ্ছাকৃতভাবে রাজ্য সরকারকে বদনাম করার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ তাঁর।

রামপুরহাটের বগটুই কাণ্ড নিয়েও পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। পুলিশ সুপারকে তীব্র ভর্ৎসনা করে তিনি বলেন, “কোথাও কিছু হলে প্রত্যাঘাত তো হবে। যদি ডিএসপি সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে যেতেন তাহলে এটা হত না। রামপুরহাটে অনেক ভুল হয়েছে। তার খেসারত দিতে হয়েছে সরকারকে।” বগটুই কাণ্ডে নিহতদের পরিবারের সদস্যদের চাকরি দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের তরফে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য আর্থিক সাহায্যের কথাও ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বেআইনিভাবে আর্থিক সাহায্য এবং চাকরি দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি বিরোধীদের। তার জল গড়িয়েছে হাই কোর্টেও। তা নিয়েও এদিন উষ্মাপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “আমি আমার থেকে চাকরি দিয়েছি। কারও থেকে না। আমাদের দেখে শেখা উচিত। ঘুষ লুকিয়ে দিলে হয়। আমরা লুকিয়ে কাউকে কিছু দিইনি।”

এছাড়াও এদিন বৈঠকে পুলিশ আধিকারিকদের একগুচ্ছ নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। এডিজি, ডিআইজি এবং আইজিদের থানায় পরিদর্শনের নির্দেশ দেন। কতবার থানা ভিজিট করছে তা লিখে রাখতে হবে। মনিটরিং সেল তৈরি করার নির্দেশ। ওই মনিটরিং সেল এফআইআরের সত্যতা খতিয়ে দেখবে। সময়মতো চার্জশিট জমার নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর। তিনি জানান, পুলিশ সুপার ও জেলাশাসকের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি করতে হবে। জোট বেঁধে কাজ করতে হবে। নাকা তল্লাশি করতে হবে। রাজনীতির রং না দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দেন তিনি।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*