বিধাননগরে তৃণমূলের জয় মোটামুটিভাবে নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। ঘাসফুল শিবিরের হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়েছেন কৃষ্ণা চক্রবর্তী ও সব্যসাচী দত্ত। তবে কে হবেন বিধাননগরের পরবর্তী মেয়র, তা এখনও স্পষ্ট নয়। সব্যসাচী ও কৃষ্ণা দুজনেই একসময় এই পুরনিগমের মেয়র পদে ছিলেন। মাঝে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন সব্যসাচী। তবে তৃণমূলে ফেরার পরও সহজেই জয় ছিনিয়ে এনেছেন তিনি। আর সব্যসাচী ইস্তফা দেওয়ার পর দায়িত্ব সামলেছিলেন কৃষ্ণা। দলবদলের তকমা থাকা সত্ত্বেও বিধাননগরের ভার সব্যসাচীর হাতে দেওয়া হবে না কি, আস্থার পুরস্কার পাবেন কৃষ্ণা, সেই প্রশ্ন রয়েই যাচ্ছে।
এ দিন ফল প্রকাশের পর তাঁদের দুজনকেই দেখা গেল কালীঘাটে। মমতার সঙ্গে দেখা করলেন সব্যসাচী ও কৃষ্ণা। মমতা নিজেই কৃষ্ণাকে ফোন করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এ দিন।
সোমবার ভোটের ফল সামনে আসার পরই সব্যসাচীকে সস্ত্রীক কালীঘাটে যেতে দেখা গিয়েছে। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি গিয়েছেন তিনি। তাঁর স্ত্রী ইন্দ্রানীকে একটি শাড়িও উপহার দিয়েছেন মমতা। তবে মেয়র পদ নিয়ে মুখ খুলতে চাননি তিনি। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি দাবি করেন, মমতা ও অভিষেকের সঙ্গে পারিবারিক বিষয়েই কথোপকথন হয়েছে তাঁর। মেয়র পদ নিয়ে প্রশ্নের মুখে সব্যসাচী বলেন, ‘মমতারই আমাদের মেয়র।’ তবে সূত্রের খবর, কথোপকথনের মাঝেই সব্যসাচী-পত্নীকে ‘ভালো উপহার’ দেওয়ার কথা বলেছেন অভিষেক।
এ দিন সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়েই সব্যসাচী জানান, প্রত্যেকবার জিতেই মাসিমা অর্থাৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মা কে প্রণাম করতে যেতেন তিনি। এবার তিনি নেই, তাই মমতার সঙ্গে দেখা করেন সব্যসাচী। তারপরই চলে যান অভিষেকের সঙ্গে দেখা করতে। আর সেখানে মমতার দেওয়া উপহারও দেখান ইন্দ্রানী। সেই সঙ্গে অভিষেককে বলেন, ‘তুমি কিছু দেবে না?’ উত্তরে অভিষেক বলেন, ‘আমি পরে গিফট দেব। ভালো গিফট অপেক্ষা করছে।’ আর সেই উপহার নিয়েই জল্পনা তৈরি হয়েছে। যদিও এ বিষয়ে খোলাখুলি কোনও উত্তর দেননি সব্যসাচী। জয়ের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তিনি। তাঁর দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নে ভরসা রেখেই ভোট দিয়েছেন মানুষ।
এ দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে যান কৃষ্ণা চক্রবর্তীও। তবে সেখানে যাওয়ার আগে মমতার সঙ্গে ফোনে কথা বলেন তিনি। মমতা নিজেই কৃষ্ণাকে ফোন করেন এবং শুভেচ্ছা জানান। তারপরেই মমতার বাড়িতে যান বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়র।
তবে, জয়ের পরও মেয়র পদ নিয়ে জল্পনা জিইয়ে রেখেছেন কৃষ্ণা। তিনি সাফ জানালেন, তিনি কাজ করতে ভালোবাসেন। তাই দলের কর্মী থাকতে পারছেন কি না, সেটাই তাঁর কাছে বড় কথা। মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রেই তিনি গুরুত্ব দেবেন বলে জানিয়েছেন। মেয়র পদের দৌড়ে তিনি থাকছেন কি না, সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে, কৃষ্ণা বলেন, ‘আমি দৌড়তে পারি না। বসে কাজ করতে ভালোবাসি। আমার কাছে কে মেয়র থাকবে না থাকবে সেটা বড় কথা নয়। দলের কর্মী থাকতে পারলাম কি না, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হৃদয় জয় করতে পারলাম কি না, সেটাই বড় কথা।’
Be the first to comment