আমার জাতি-ধর্ম ‘মানবতা’, বিজেপি হলো অতিমারিঃ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

Spread the love

হাথরসের ঘটনার প্রতিবাদে রাজপথে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার ৩ অক্টোবর বিড়লা প্ল্যানেটোরিয়াম থেকে গান্ধী মূর্তি পর্যন্ত পদযাত্রা করেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্ব ভারতীয় সভানেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোভিড পরিস্থিতি থাকা সত্ত্বেও এই নারকীয় ঘটনার প্রতিবাদে পথে নামতে হলো; বলেন মমতা।

মিছিল শেষে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে তিনি যে বক্তব্য রাখেন তার বাছাই করা অংশ নীচে দেওয়া হলো।

১. হাথরসের ঘটনায় আমার মনে হয়েছিল ছুটে চলে যাই উত্তরপ্রদেশে। আমার হৃদয় পড়ে আছে হাথরসে। আমাদের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধিরা হাথরসের ঘটনাস্থলে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু গ্রামে ঢোকার ১ কিলোমিটার আগেই তাঁদের আটকে দেওয়া হয়। মহিলাদের এমনকি সাংবাদিকদের গায়েও হাত তোলা হয়। আমার কাছে খবর আসে সাংবাদিকদের হুমকিও দেওয়া হয়।

২. কৃষক সমাজ, যুব সমাজ, ছাত্র সমাজ, সংখ্যালঘু, দলিতদের এক অদ্ভুত অন্ধকারের মধ্যে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু আমরা তাঁদের আলোর দিকে নিয়ে যাবো।

৩. উত্তরপ্রদেশে এনকাউন্টার, দিল্লিতে দাঙ্গা, সাংবাদিকদের মেরে ফেলা এই ধরনের ঘটনাই তো হচ্ছে। কতজন মানুষ ন্যায়বিচার পাচ্ছেন? কিন্তু আমরা তৃণমূল কংগ্রেস ন্যায়বিচারের জন্য সোচ্চার হয়েছি, হবো। আমার একমাত্র জাতি, ধর্ম হলো মানবতা।

৪. অপরাধমূলক কাজ যেকোনো জায়গাতেই হতে পারে। যেখানেই হোক না কেন আমরা এর তীব্র নিন্দা করি। কিন্তু মানুষ আশা করেন ন্যায়বিচার। কিন্তু হাথরসে কী হলো? পরিবারকে মেয়েটির মৃতদেহ না দিয়ে পুলিশ জ্বালিয়ে দিলো। ফোন নিয়ে নেওয়া এমনকি সংবাদমাধ্যমকে মেয়েটির পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে না দেওয়া এইসবই করেছে পুলিশ প্রশাসন।

৫. এটা হলো সবচেয়ে বেশি স্বৈরাচার। এটা গণতন্ত্র নয়, বিজেপি হল সবচেয়ে বড়ো অতিমারি।

৬. জিএসটির টাকা কোথায় গেলো? রেল থেকে বিএসএনএল সবকিছুকে ওরা বিক্রি করে দিচ্ছে।

৭. আমাদের কোভিড নিয়ে পরামর্শ দিচ্ছে। কিন্তু নিজেরা কি করছে? প্রচুর মানুষ কাজ হারাচ্ছে। পরিযায়ী শ্রমিকরা, ক্ষুদ্র কুটির শিল্পে যুক্ত মানুষ চোখের জল ফেলছে। কিন্তু কেন্দ্র কিছুই করছে না।

৮. ওরা প্রচার করছে মমতা দিদি দুর্গা পুজো, সরস্বতী পুজো করতে দিচ্ছে না। তাহলে যোগী আদিত্যনাথ কেন দুর্গা পুজোর অনুমতি দিলেন না?

৯. আমি নির্যাতিতা মেয়েটির পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমি শুনলাম তাঁদের ফোন নিয়ে নেওয়া হয়েছে। কতদিন আর আমাদের তাঁদের কাছে পৌঁছতে বাধা দেবেন? দলিত মেয়েটি যে আমার অত্যন্ত আপন।

১০. উত্তরপ্রদেশের এই ঘটনাটির মতো বাংলাতেও প্রায় একই ঘটনা ঘটেছিল সিঙ্গুরে। আমি ২৬ দিনের অনশন ধর্মঘট করেছিলাম। সুতরাং এই বিষয়গুলিও আমাদের নজরে আছে। আমরা তপশিলী জাতি-উপজাতিদের গ্রামে যাবো, যাবো দলিত গ্রামে এবং বিজেপির অত্যাচারের বিরুদ্ধে মানুষকে রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*