যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের স্নাতক স্তরের প্রথম বর্ষের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুন্ডুর অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে তোলপাড় রাজ্য। হোস্টেলের ছাদ থেকে পড়েই এই মেধাবী মৃত্যু হয়েছে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত তদন্তকারীরা। ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টেও সেই বিষয়টি উঠে এসেছে। তবে খুন, দুর্ঘটনা নাকি আত্মহত্যা, সেটা নিয়ে এখনও নিশ্চিত নয় পুলিশ। তদন্ত, জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
এদিকে, মৃত ছাত্র স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর বাবার সঙ্গে ফোনে কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল, বৃহস্পতিবার রাতের দিকে ফোনে দুঃখপ্রকাশের পাশাপাশি আশ্বাস দেন পরিবারের পাশে থাকার। তদন্ত যাতে ভালোভাবে হয়, সেদিকটিও নিশ্চিত করেন মুখ্যমন্ত্রী। কেউ দোষী প্রমাণিত হলে তাঁকে শাস্তি দেওয়ার আশ্বাসও দেন তিনি।
তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাতে মৃত্যুর আগে ‘অস্বাভাবিক’ আচরণ করেছিলেন স্বপ্নদীপ। তিনি নাকি বার বার সকলকে বলছিলেন, ‘‘আমি সমকামী নই।’’ হস্টেলের অন্য ছাত্ররাও তাঁকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। তাঁরা স্বপ্নদীপের এই আচরণের কথা জানাতে রাতেই ডিন অফ স্টুডেন্টসের সঙ্গে যোগাযোগও করেন বলে দাবি। প্রথম বার কথা হলেও রাত ১১টার পরে তিনি আর ফোন ধরেননি বলে অভিযোগ। অন্য ছাত্রদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এমন তথ্যই পুলিশ জানতে পেরেছে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে যান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। পদাধিকার বলে তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যও বটে। বাংলা বিভাগের অধ্যাপকদের জরুরি তলব করেছেন আচার্য তথা রাজ্যপাল।
অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে হস্টেল সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। নতুন এই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রদের মেইন হস্টেল থেকে অবিলম্বে সরানো হচ্ছে নতুন বয়েজ হস্টেলে। এর পাশাপাশি স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, হস্টেলে যাদবপুরের প্রাক্তনী বা বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ। এই নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে কেউ প্রবেশ করলে সুপারিনটেন্ডেডকে তাদের নাম জমা দিতে হবে সঙ্গে সঙ্গে। এদিকে স্বপ্ননীলের মৃত্যু নিয়ে যাদবপুরের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে ইউজিসি। আজ অর্থাৎ শুক্রবার বৈঠকে বসবে অ্যান্টি ব়্যাগিং স্কোয়াড।
Be the first to comment