বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছে দিতে নতুন প্রকল্প ‘জলস্বপ্ন’ ঘোষণা মমতার

Spread the love

পুরুলিয়ার রুখা-শুখা মাটিকে শস্য-শ্য়ামলা করার আশ্বাস আগেই দিয়েছিলেন তিনি ৷ আর এবার দিলেন বাঁকুড়ার ঘরে ঘরে পরিশ্রুত জল পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ৷ সোমবার জেলায় ভোটপ্রচারে এসে নয়া প্রকল্পের কথা জানালেন মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় ৷ এদিন বাঁকুড়ার ইন্দাসে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী রুনু মেটের সমর্থনে জনসভা করেন মমতা ৷ সেখানেই জানান ‘জলস্বপ্ন’ প্রকল্পের কথা ৷

গতকালই বাঁকুড়ায় সভা করে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ সোমবার সেই মাটিতেই পরপর তিনটি জনসভা করেন তৃণমূল সুপ্রিমো ৷ কোতুলপুরে সভার কাজ শেষ করে হাজির হন ইন্দাসে ৷ সেখানে তাঁর বক্তব্য়ের শুরুতেই উঠে আসে এই এলাকার তথা গোটা বাঁকুড়া জেলার জলসমস্য়ার কথা ৷ মমতার আশ্বাস, তাঁদের সরকার ফের একবার ক্ষমতায় এলে এই সমস্য়া মিটিয়ে ফেলা হবে ৷

ইন্দাসের সভামঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী জানান, এলাকায় জলপ্রকল্পের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে ৷ বাঁকুড়ায় শুধুমাত্র জল প্রকল্পের জন্যই 2 হাজার কোটিরও বেশি টাকা খরচ করা হচ্ছে ৷ সম্প্রতি একটি নতুন প্রকল্প রূপায়ণে হাত দিয়েছে রাজ্য সরকার ৷ প্রকল্পটির নাম জল্পস্বপ্ন ৷ এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলেই ইন্দাসের ঘরে ঘরে পাইপলাইনের মাধ্যমে জল সরবরাহ শুরু হয়ে যাবে ৷ মিটবে জলের জন্য হাহাকার ৷ মমতার দাবি, ইতিমধ্যেই বাঁকুড়ায় 70 হাজার বাড়িতে জলের সংযোগ চালু হয়ে গিয়েছে ৷

প্রসঙ্গত, বাঁকুড়া, পুরুলিয়ার মতো পশ্চিমের জেলাগুলিতে জলকষ্ট নতুন কিছু নয় ৷ গ্রীষ্মের দাপট যত বাড়ে, ততই বাড়ে জলের চাহিদা ৷ এ নিয়ে জেলাবাসীর ক্ষোভও বহু পুরনো ৷ সম্প্রতি পুরুলিয়ায় ভোট প্রচারে এসে এ নিয়ে মুখ খুলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ তাঁর অভিযোগ ছিল, রাজ্য সরকারের অনীহাই এইসব এলাকায় জলকষ্টকে জিইয়ে রেখেছে ৷

এছাড়া, ভোট মরশুমে টেলিভিশনের বাংলা চ্য়ানেলগুলিতে সম্প্রচারের জন্য বেশ বিজ্ঞাপন তৈরি করেছে বিজেপি ৷ তাতে জলকষ্টের বিষয়টিও আছে ৷ গেরুয়া শিবিরের বার্তা, বাংলায় পদ্ম ফুটলে কোনও ঘরেই আর পরিশ্রুত জলের অভাব থাকবে না ৷ জলের পাইপলাইন পৌঁছে যাবে বাড়ি বাড়ি ৷

এই প্রেক্ষাপটে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের এদিনের ‘জলস্বপ্ন’ মন্তব্য নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ ৷ তাঁর সরকার ১০ বছর ক্ষমতায় থাকার পরও পশ্চিমের জেলাগুলিতে কেন জলকষ্ট সম্পূর্ণ মেটানো যায়নি , সেই প্রশ্ন খুবই প্রাসঙ্গিক ৷ আর তার জবাবে মমতার পরিশ্রুত পানীয় জল সরবরাহের আশ্বাসও তাই খুবই স্বাভাবিক বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল ৷

এছাড়া, ইন্দাসের এদিনে সভা থেকেও স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই বিজেপিকে আক্রমণ করেন মমতা ৷ নন্দীগ্রামে তাঁর জখম হওয়ার ঘটনায় ফের একবার কাঠগড়ায় তোলেন বিজেপিকে ৷ তাঁর হুশিয়ারি, ‘‘বিজেপিকে আমাকে চেনে না ৷ আমি ভাঙি তবু মচকাই না ৷’’ মমতার বার্তা, এক পায়ের প্লাস্টার থাকলেও তাঁর অন্য পায়ে যথেষ্ট জোর রয়েছে ৷ প্রয়োজনে এক পায়ে ‘শট’ মেরেও বিজেপিকে ‘মাঠের বাইরে’ পাঠাতে তিনি প্রস্তুত বলে জানান মমতা ৷

বিজেপি যে কতটা ভয়ঙ্কর দল, তা বোঝাতে তাদের বিষধর কেউটে সাপের সঙ্গে তুলনা করেন মমতা ৷ তাঁর বার্তা, গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে হলে গণতান্ত্রিক উপায়েই বিজেপিকে কবর দিতে হবে ৷

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*