শুধু মমতা ব্রান্ডের উপর ভর করেই একুশ জয়ের লক্ষ্য তৃণমূলের। বিধানসভা ভোটের আগে এই ব্র্যান্ডিংকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে ‘বাংলার গর্ব মমতা’ কর্মসূচি চালু হল। সোমবার সকাল ১০টা নাগাদ নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে এই কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করেন দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বেশ কয়েকটি পর্যায়ে পালিত হবে কর্মসূচি। ৭৫ দিন ধরে চলবে কর্মসূচি। প্রথম ধাপে ৭ মার্চ থেকে ১৫ তারিখ, দ্বিতীয় ধাপে ২০ মার্চ থেকে ১৯ এপ্রিল এবং তৃতীয় ধাপ ২০ এপ্রিল থেকে ১০ মে পর্যন্ত প্রচার চলবে। এই কর্মসূচির আওতায় ৭৫ হাজারেরও বেশি দলীয় নেতা ও কর্মী পশ্চিমবঙ্গের ১৫ হাজার মানুষের কাছে যাবেন। বাংলার প্রায় আড়াই কোটি মানুষের কাছে পৌঁছবেন।
মূলত সরকারের জনকল্যাণমূলক কাজগুলির সুফল প্রচারের আকারে নিয়ে যেতে হবে একেবারের বুথ স্তরে। প্রত্যেকটি এলাকায় জনজাতির ভিত্তিতে আলাদা করে সভা, সম্মেলন চলবে। এদিন একটি প্রেজেন্টেশন দেখানো হয় নেতা-কর্মীদের। সেখানে বলা হয়েছে তিনটি পর্যায়ে হবে এই কর্মসূচি।
একনজরে সেই কর্মসূচি:
স্বীকৃতি সম্মেলন – দলের পুরনো কর্মীদের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি। সংহতি সভা – ২৭৭ টি বিধানসভা কেন্দ্রে তফসিলি জাতির সদস্যদের জন্য সভা। চেতনা সভা – ৯৭ টি বিধানসভা কেন্দ্রের তফসিলি উপজাতিদের সঙ্গে জনসংযোগ।
বাংলার বার্তা – ৩৫০০ পঞ্চায়েত ও পুরসভা এলাকায় জনসভা। নবীন বরণ সভা – ১ লক্ষ যুবককে নিয়ে ২০ হাজার জনবসতি এলাকায় যুবদের একত্রিত করে দলে যোগদান। বিশিষ্ট সম্মেলন – ২৯৪ বিধানসভায় ১৫ হাজার মহিলাকে বিশেষ সম্মান প্রদান। তৃণমূলের সঙ্গে মান্যজন – ২৯৪ বিধানসভায় ২৫০০০ জনমত গঠনকারী মানুষের সঙ্গে একক বৈঠক নেতাদের।
দ্বিতীয় ধাপে অর্থাৎ ২০ মার্চ থেকে জনবসতিপূর্ণ এলাকায় হবে বঙ্গধ্বনি যাত্রা। তৃতীয় পর্যায়ে হবে তৃণমূল পদাতিক সম্মেলন। ১৫০০ কিমি পদযাত্রা ও বুথ কর্মী সম্মেলন। ২৯৪ টি বিধানসভার অন্তত ৫ লক্ষ বুথে এই প্রচার হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এতদিন বিভিন্ন বক্তৃতায় যে উল্লেখযোগ্য যা বলেছেন, যেসব রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সেসব একত্রিত করে ট্রেলার বানিয়ে চালানো হবে সর্বত্র। তাঁর এতদিনের কাজ, রাজনৈতিক জীবন সংগ্রাম তুলে ধরা হয়েছে এই ভিডিওতে। দেশের বড় নেত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইমেজ ছড়িয়ে দেওয়া হবে। গত জুলাই মাসে ‘দিদিকে বলো’র কর্মসূচি নিয়েছিল তৃণমূল।
তাদের দাবি, ওই কর্মসূচিতে তারা একশো ভাগ সফল। যদিও এই কর্মসূচি নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগের শেষ নেই। রবিবারই বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ বাংলায় এসে আর নয় অন্যায় নামে একটি কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। সেখানে তৃণমূল সরকারের ব্যর্থতাগুলি মানুষের কাছ তুলে ধরবে তারা।
সোমবার ‘বাংলার গর্ব মমতা’ কর্মসূচি ঘোষণা করে শাসক দল বুঝিয়ে দিলো কোনও ভাবেই গেরুয়া শিবিরকে তারা একচুল জমিও ছাড়বে না। এদিন পুরো অনুষ্ঠানের আয়োজনে ছিল প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাক। তৃণমূলের এই মেগা ইভেন্ট একেবারে চূড়ান্ত শৃঙ্খলায় বাঁধা ছিল। বক্তব্য শেষে সকলকে সংবিধান পাঠ করান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
Be the first to comment