বিধানসভা নির্বাচনের আগে তিন কেন্দ্রের বিধানসভা উপনির্বাচনকে নিজেদের শক্তি যাচাই করতে চেয়েছিল বঙ্গ বিজেপি। নির্বাচনের আগে জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী থেকেও মুখরক্ষা হয়নি তাঁদের। একটি আসনও দখল করতে পারে নি গেরুয়া শিবির। আর এই ভরাডুবির পিছনে অন্যতম কারণ হিসাবে উঠে আসছে এনআরসি ইস্যু। বিজেপির এনআরসি বিলের ফলেই মানুষ তাঁদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে বলে মত বহু রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। এবারে এই এনআরসি ইস্যু নিয়েই অন্য রণকৌশল নিতে চলেছে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। উপনির্বাচনে হারার পর শনিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপবাবু বলেন, ‘এনআরসি নিয়ে মমতা মিথ্যা ভয় দেখিয়েছে, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের কথা মমতা চেপে গিয়েছে। আমরা মানুষকে বোঝাব, আগে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল, তারপর এনআরসি। প্রত্যেক হিন্দু শরণার্থীই নাগরিকত্ব পাবেন।’
চলতি বছরে লোকসভায় বিপুল ভোটে ক্ষমতায় ফেরার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হন অমিত শাহ। এই মন্ত্রকের দায়িত্ব হাতে নেওয়ার পরেই এনআরসি বা নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল সারা দেশেই চালু হবে বলে জানান তিনি। ১৯৭১ সালের পরে যারা এই দেশে এসেছেন তাঁদের নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছিলেন তিনি। এই মন্তব্য ঘিরে সারা দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। যার আঁচ এসে পড়ে বঙ্গ রাজনীতিতেও। এই এনআরসি ইস্যু নিয়ে সরব হন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার কোনও মানুষকে দেশছাড়া হতে দেবেন না বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি। তৃণমূলনেত্রীর এই ‘আশ্বাস’-ই ফুটে উঠেছে ব্যালট-বাক্সে। অন্যদিকে উপনির্বাচনে এনআরসি সম্পূর্ণ বুমেরাং হয়ে গিয়েছে বিজেপি নেতৃত্বের কাছে। ‘এনআরসি ভীতি’ থেকেই বিজেপির থেকে বহু মানুষ দূরে সরে গিয়েছে বলে মত রাজনৈতিক মহলের।
সূত্রের খবর এনআরসি বিষয়ে এখনও নিজেরাই ধোঁয়াশায় রয়েছেন বিজেপি নেতারা। এই অবস্থারই ফায়দা তুলেছে তৃণমূল নেতৃত্ব। এনআরসিতে কাদের রাখা হবে আর কাদের রাখা হবে না এই নিয়ে সঠিক তথ্য নেই বিজেপির অন্দরে। হিন্দু,বৌদ্ধ,জৈনদের শরণার্থী হিসাবে ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কিন্তু, এই তথ্য আদৌ কতটা সত্যি তা নিয়ে সন্দিহান খোদ রাজ্য বিজেপির নেতারাই। ফলে এই তথ্য তুলে ধরতে নির্বাচনের আগে জনসংযোগ বাড়ায়নি গেরুয়া শিবির। যার নিট ফল তিন কেন্দ্রেই মুখ থুবড়ে পড়েছে পদ্ম শিবির।
Be the first to comment