একেবারে চালিয়ে খেলা যাকে বলে! ভাল কাজের প্রশংসা ছিল, তবে তা সামান্যই। তৃণমূল সুপ্রিমো বেশি সময় নিলেন দলকে এককাট্টা করতেই। রোগ বুঝে দিলেন কড়া দাওয়াইও। তৃণমূল কংগ্রেসের বর্ধিত কমিটির সভায় নেতা থেকে মন্ত্রী, নেত্রীর চপেটাঘাত থেকে রেহাই পেলেন না কেউই।
ধমক তো বটেই, এমনকি ‘চাকরি’ও খোয়ালেন ব্লক স্তরের নেতারা। পঞ্চায়েতের ফল অনুযায়ী মন্ত্রিসভায় রদবদল করেছিলেন আগেই। এবার ব্লক স্তরের সংগঠনেও হাত দিলেন দলনেত্রী।
গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে নাক কাটা গিয়েছে দলের। দলের মধ্যে দুই নেতার ঝগড়ায় আখেরে ক্ষতি হয়েছে তৃণমূলেরই। উল্টে ফায়দা লুঠেছে বিজেপি। অগত্যা বাড়তি নজর দিতেই হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়াড়িতে তৃণমূল জিতেছে ঠিকই, কিন্তু শাসক দলের ডিফেন্সের ফাঁক দিয়ে ইতিউতি ঝোপ বুঝে কোপও দিয়েছে গেরুয়া শিবির। লালুয়া, নছিপুর, গঙ্গেশপুরে অন্তর্দ্বন্দের কারণেই ফল খারাপ হয়েছে তৃণমূলের। এবার তার ফল ভুগতে হল শাসক দলের দুই নেতা জগদীশ দাস এবং ফটিক পাহাড়িকে। তৃণমূলের বর্ধিত কোর কমিটির সভা থেকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ, “কেশিয়াড়ি ব্লক কমিটি ভেঙে নতুন করে তৈরি করতে হবে। জগদীশ (দাস)- ফটিক (পাহাড়ি) কাউকেই দরকার নেই আমার। দলের উর্দ্ধে হয়ে গেছে না! নতুন লিডার দিয়ে সংগঠন তৈরি করো”।
দলনেত্রীর খড়্গহস্ত রূপ লাইভ দেখেছেন ফটিক পাহাড়ি। ‘সাজা’ পাওয়ার পর করুণ মুখে ফটিক পাহাড়ি বলছেন, “আমি রাজা নই। প্রজাই ছিলাম। দিদির সিদ্ধান্তের উপর কোনও সিদ্ধান্ত নেই”। তবে তিনি মেনেছেন, উন্নয়নের পরও দল খারাপ করেছে, কারণ দলের কোন্দল। বুথ স্তরে সমন্বয় ঠিক হয়নি বলেই বিজেপি ফয়দা পেয়েছে বলে মত ফটিক পাহাড়ি।
অন্যদিকে, কেশিয়ারির ব্লক সভাপতি জগদীশ দাসও বলছেন একই কথা। “দলের মালিক প্রয়োজন মনে করেনি, তাই হঠিয়ে দিয়েছে। ঠিক করেছেন। নিজেদের ঝগড়াঝাটির জন্যই খারাপ ফল হয়েছে”, রাখঢাক না রেখেই জানিয়েছেন জগদীশ দাস। তবে তাঁর আক্ষেপ, “আমি অন্তর্ঘাতের তদন্ত চেয়েছিলাম। কেউ শুনল না। বিচার হল না”।
Be the first to comment