আবারও প্রধানমন্ত্রী মোদীকে চিঠি লিখলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাশিয়া-ইউক্রেন সংক্রান্ত বিষয় নিয়েই এই চিঠি লেখা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। মেডিক্যালের পড়ুয়াদের অনিশ্চিত ভবিষ্য়তের আশঙ্কায় এই চিঠি পাঠিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইউক্রেন ফেরত মেডিক্যালের পড়ুয়াদের নিয়ে একাধিক পরামর্শ জানিয়ে চিঠি লিখেছেন তিনি।
ভারতে ফিরে এলেও ভবিষ্যত অনিশ্চিত সেইসব পড়ুয়াদের যাঁদের মাঝ পথেই পড়াশোনা ছেড়ে আসতে হল। ইউক্রেন থেকে পশ্চিমবঙ্গে ফিরে আসা নাগরিকদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত ৩৯১ জন পড়ুয়া রয়েছে। সেইসব পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে উদ্বেগ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে লিখেছেন, “দেশে মেডিক্যাল পড়াশোনা ন্য়াশনাল মেডিক্যাল কমিশন কর্তৃক পরিচালিত হয়। তাই কিছু পরামর্শ দেওয়া হল বিবেচনার জন্য।” তিনি চিঠিতে চারটি পরামর্শেরও উল্লেখ করেছেন। পরামর্শগুলি হল-
১. এনএমসি এর বর্তমান গাইডলাইন অনুসারে যেসব শিক্ষার্থীরা ইন্টার্নশিপের জন্য যোগ্য তাঁদের রাজ্যের সরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলিতে ভাতা সহ তাঁদের ইন্টার্নশিপের সুযোগ দেওয়া হোক।
২. বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ বর্ষে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলিতে বিদ্যমান আসনগুলিতে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হোক। সেই হিসেব মতো আসন সংখ্য়াও বাড়ানো হোক।
৩. এনএমসি এর নিয়ম অনুযায়ী যেসব ছাত্র-ছাত্রীরা ন্যাশনাল এন্ট্রান্স এলিজিবিলিটি টেস্ট (NEET-UG) উত্তীর্ণ হয় তাঁরাই একমাত্র মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হতে পারেন। ইউক্রেন থেকে ফেরা এইসব পড়ুয়া ভর্তি হওয়ার এই নিয়ম পূরণ করে না। বিশেষ ব্যবস্থা হিসেবে এইসব পড়ুয়াদের ভর্তির জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে যাতে সংশ্লিষ্ট গাইডলাইন কিছুটা শিথিল করা হোক।
৪. রাজ্য কোটা ফি এর আওতায় বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলি এইসব পড়ুয়াদের জায়গা করে দিতে প্রস্তুত। কোর্সের ফি দেওয়ার জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার এইসব শিক্ষার্থীদের আর্থিক সাহায্য় দেওয়ার বিষয়েও সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী নিজেই এদিন ঘোষণা করেছেন ইউক্রেন ফেরত মেডিক্যাল পড়ুয়াদের রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজে পড়ার সুযোগ দেওয়া হবে এবং কলেজে ভাতা সহ ইন্টার্নশিপ করার সুযোগ দেওয়া হবে। এদিকে তিন সপ্তাহ পেরিয়ে গেল ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন। ইতিমধ্যে দুই তরফের প্রতিনিধিরাই যুদ্ধবিরতি নিয়ে একাধিকবার মুখোমুখি বসেছেন। তবুও কোনও সুরাহা মেলেনি। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন এখনও জারি রয়েছে। চলছে ধ্বংসের খেলা। ইউক্রেনের এই যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যেই সেই দেশে আটকে পড়েছিল ২০ হাজারেরও বেশি নাগরিক। তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন পড়ুয়া। রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে প্রাণ সংশয়ের ভয়ে দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হন তাঁরা।
Be the first to comment