প্রত্যাশামতোই উত্তরবঙ্গের মাথাভাঙ্গায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চার জনের মৃত্যুর ঘটনায় রুদ্রমূর্তি ধারন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরাসরি অভিযোগ তুললেন বিজেপির দিকে।
মমতার কথায়, বিজেপি হারছে বলে গুলি করে মারছে। কিন্তু সকলে শান্ত থাকুন। কেউ অশান্তিতে জড়াবেন না। শনিবার উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জের জনসভা থেকে মমতা আক্ষেপের সুরে বলেন, ‘কী অন্যায় করেছিলেন মানুষগুলো? এজেন্সিকে কাজে লাগাচ্ছে এরা। মেয়েদের ভয় দেখাচ্ছে।’
তৃণমূল নেত্রীর সংযোজন, অত্যন্ত মর্মাহত হয়ে আজ কথা বলছি। সিআরপিএফ গুলি চালিয়ে চার জনকে মেরে ফেলল। আমি বারবার বলছি, সিআরপিএফ আমার শত্রু নয়। কিন্তু কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কথায় চলছে ওরা। এত ঔদ্ধত্য কেন?’
ঘটনায় অমিত শাহের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করে মমতা বলেন,’স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিন অমিত শাহ। তুমি চক্রান্তকারী। আমি অনেক দিন ধরে বলছি সিআরপিএফ অত্যাচার করছে। আমি সিআরপিএফের বিরুদ্ধে নই। গ্রামে গ্রামে মেয়েদের উপরে অত্যাচার, অসম্মান করা হচ্ছে। বিজেপিকে ভোট দেওয়ার জন্য ছেলেমেয়েদের ভয় দেখাচ্ছে সিআরপিএফ।
এরপরই তৃণমূল নেত্রীর আহ্বান, ‘এই ঘটনার বদলা নিতে হবে। একটা করে ভোট, একটা করে বদলা। এতগুলো মানুষকে গুলি করে মেরে বলছে, আত্মরক্ষা! রিটায়ার্ড লোক আমার নিরাপত্তারক্ষী হলে অসুবিধা, আর রিটায়ার্ড লোককে দিয়ে নির্বাচন কমিশন চালাচ্ছে। আজকে আমার হাতে নেই আইনশৃঙ্খলা। তৃণমূল নেতা, পাবলিককে খুন করা হচ্ছে।’
এরপরই নির্বাচন কমিশনকে চ্যালেঞ্জ করে তিনি বলেন, ‘আমার সঙ্গে যদি রিটায়ার্ড লোক না থাকতে পারে, তাহলে নির্বাচন কমিশন কী করে রিটায়ার্ড লোককে দিয়ে ভোট করাচ্ছে। আমি নির্বাচন কমিশনকে চ্যালেঞ্জ করছি। আমাকে নোটিশ পাঠালে পাঠান।’
মাথাভাঙার জোরপাকাটিতে গুলি চালানোয় অভিযুক্ত খোদ কেন্দ্রীয় বাহিনী। ঘটনায় গোটা এলাকা স্তব্ধ, স্তম্ভিত গোটা মাথাভাঙাও। কমিশন কার্যত স্বীকারও করেও নিয়েছে গুলি চালিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীই। এই নিয়ে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টও তলব করছে নির্বাচন কমিশন। মৃতদের নাম হামিদুল হক, হামিউল হক, নুর আলম,মনিরুল হক।
এছাড়াও অন্তত পাঁচজন আহত। মৃতদের পরিবারের দাবি, সম্পূর্ণ পরিকল্পনা মাফিক গুলি চালিয়েছে বাহিনী। যদিও বাহিনী সূত্রে খবর, ৪০০-৫০০ গ্রামবাসী ঘিরে ধরেছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীকে। সেই সময় কয়েকজন বাহিনীর আগ্নেয়াস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। তখনই আত্মরক্ষার্থে গুলি চালাতে বাধ্য হয় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা।
Be the first to comment