ভিডিও সৌজন্যে- মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফেসবুক
লোকসভা ভোটের পর শুক্রবার উত্তর চব্বিশ পরগনা দিয়েই জেলা স্তরে প্রশাসনিক বৈঠক শুরু করলেন মুখ্যমন্ত্রী। লোকসভা ভোটে ধাক্কা খাওয়ার পর, এটাই প্রথম জেলা প্রশাসনিক বৈঠক। ভোট পরবর্তী অশান্তিতে সবচেয়ে বেশি উত্তপ্ত জেলার শীর্ষে উত্তর চব্বিশ পরগনা। শুক্রবার মধ্যমগ্রামের নজরুল শতবার্ষিকী সদনে উত্তর ২৪ পরগণার প্রশাসনিক বৈঠকে উপস্থিত হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিনের প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প প্রায় সাড়ে ৭ কোটির উপরে যাবে। সরকারের টাকার অবস্থা ভালো নয়। ৮ বছর আগে সরকারি কর্মীরা ঠিকমতো মাইনে পেতেন না। আর এখন মাসের প্রথমেই সবাই মাইনে পেয়ে যান। যেটা সহজে করা যাবে সেটাই দেখতে হবে। বেশি টাকা খরচ করবো না। মমতা আরও বলেন, এবছর ৫৬ হাজার কোটি টাকা শোধ করতে হবে। তারমধ্যে পে কমিশন আসছে। আগের সরকার ৩ হাজার, ৪ হাজার দিয়ে বসিয়ে দিয়েছে। তারাই আবার এটা দাও ওটা দাও করছে। বুঝে খরচ করুন। কোষাগার একটাই।
পাশাপাশি এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, আমরা ১২৩% ডিএ দিয়েছি। মমতা বলেন, সবাইকে দ্রুত জন্ম সার্টিফিকেট দিতে হবে। এসসি, এসটি, ওবিসি সার্টিফিকেটের জন্য যেন কাউকে ঘুরে বেড়াতে না হয়। এবার থেকে মাসে মাসে মিটিং করে এসসি, এসটি, ওবিসি সার্টিফিকেট দিতে হবে। সার্টিফিকেট যা পেন্ডিং আছে সাধারণভাবে হচ্ছে না আটকাচ্ছে, কিন্তু সেই কাজই অন্যভাবে হচ্ছে।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক বৈঠকে হাজির হন রাজারহাট নিউটাউনের বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত। তিনি মমতাকে বলেন, জেলায় বিভিন্ন দফতরের মধ্যে বোঝাপড়ার অভাব। আর এখানে পুকুর ভরাটের একটা সমস্যা আছে। আমরা এই বিষয়ে জেলাশাসককে জানিয়েছিলাম। বারাসতে যশোর রোডের উপরে সরকারি জমিতে বাড়ি হচ্ছে। এটা নিয়ে একটু দেখতে হবে। আর এই প্রশ্নের উত্তরে মমতা জানান, তুই নিজে কর্পোরেশনে ছিলি। তুই নিজে জানিস। তোদেরও এই বিষয়ে নজর রাখতে হবে। নিজের বিধানসভা এলাকায় কোন সমস্যা থাকলে জানা।
মমতা বলেন, রেশন কাউকে কম দেবেন না। কেন সরকারকে বাধ্য করবেন আপনার লাইসেন্স বাতিল করে দেওয়ার জন্য? এছাড়াও এদিন জুট টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রির উন্নয়নেরও আর্জি জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই কাজে ছাত্রযুবরা আমাকে সাহায্য করো। এদিন বিডিওদের যব কার্ড হোল্ডারদের সবার মধ্যে কাজ ভাগ করে দেওয়া এবং ১০০ দিনের কাজের টাকা তাড়াতাড়ি দেওয়ার কথা বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ব্যারাকপুরকে আগে থেকে দেখে রাখবেন। কেউ অন্যায় করলে তাকে ছাড়বেন না। ওটা খুব সেন্সিটিভ। কেউ কেউ তো আবার খেলার ছলে বোম ছুঁড়ে দেয়। মমতা বলেন, ব্যারাকপুর, ভাটপাড়ায় শান্তি বজায় রাখুন। আগে শান্তি আনো তাহলেই সব কাজ হয়ে যাবে।
প্রসঙ্গত, ১ আগস্ট ‘সবুজ বাঁচাও’ অনুষ্ঠানে বিড়লা প্ল্যানেটোরিয়াম থেকে রবীন্দ্র সরোবর পর্যন্ত হাঁটবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই অনুষ্ঠানে সবার হাতে গাছের চারা তুলে দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেন, সাইকেলে চড়ে প্রচার করো। সমাজসেবায় মানুষ এগুলো পছন্দ করে। কিছু মানুষের পর নিজেরাই উদ্যোগ নেবে। তিনি আরও বলেন, বর্ডারে যেন কোনোরকম অনুপ্রবেশ না হয়। এটা আমাদের রাজ্য। পুলিশ সবসময় সবকিছু করতে পারে না। সাধারন মানুষকে আরও বেশি সচেতন হতে হবে। বর্ডার থেকে হঠাৎ কেউ ঢুকে এসে একটা দাঙ্গা লাগিয়ে চলে গেলো, সেটা নিজেদের একটু দেখে নিতে হবে। মনে রাখতে হবে এটা আমাদের সবার রাজ্য।
শুনুন এদিন অনুষ্ঠানে কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী?
Be the first to comment