করোনা পরিস্থিতি নিয়ে এর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকে বসলেও সেখানে খুব কম কথা বলারই সুযোগ পেয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তা নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষোভও ব্যক্ত করেছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, বেশ বৈঠক এড়িয়ে যাওয়ার বিষয়ও ঘটেছে। এমন পরিস্থিতিতে আবার সামনে এসেছে মঙ্গল ও বুধবার মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে আবার যে বৈঠক করছেন মোদী, তাতে বক্তা তালিকায় নাম নেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর। এই পরিস্থিতিতে আবারও কড়া অবস্থানই নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নবান্ন সূত্রের খবর, বুধবার মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ভিডিয়ো কনফারেন্সে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত থাকবেন না। জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীকে বক্তব্য রাখতে না দেওয়ায় কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে ভিডিয়ো কনফারেন্সে থাকবেন মুখ্যসচিব ও রাজ্যের অফিসাররা। তবে তাঁরা নীরব দর্শকের ভূমিকাই পালন করবেন।
জানা গিয়েছে, সোমবার নবান্নে যে তালিকা দিল্লি থেকে এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, ৩৬টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে বলার সুযোগ পাবে মাত্র ১৩টি রাজ্য, যার মধ্যে নেই নেই পশ্চিমবঙ্গের নাম। এর কোনও ব্যাখ্যা কেন্দ্রীয় সরকার সূত্রে মেলেনি। রাজ্য সরকারের অন্দরমহলের বক্তব্য, কোভিডের সঙ্গে উম্পুনের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে লড়াই করছে পশ্চিমবঙ্গ। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যকে বলার সুযোগ দেওয়া উচিত ছিল।
তৃণমূল নেতা তথা মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের কথায়, ‘বলার সুযোগ দিলে বাংলার প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনার বিষয়টি আবার সারা দেশের সামনে চলে আসত। তাই নিজেদের মুখ বাঁচাতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এটা অসহযোগিতা।’ পালটা হিসেবে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য বলেছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী সবকিছু নিয়েই খবর করতে চান। এবারও তাই চেয়েছেন। খবর হয়ে গিয়েছে। এবার উনি চুপ করে যান।’
সরকারি সূত্র জানাচ্ছে, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, কর্নাটক, পঞ্জাব, বিহার ও ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীরা বক্তার তালিকায় থাকলেও তাতে নাম নেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এর আগে অবশ্য করোনাভাইরাস নিয়ে রাজনীতি করছে কেন্দ্রীয় সরকার, মোদীর সঙ্গে বৈঠকে এমনই অভিযোগ করে রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ ছিল, কেন্দ্র করোনা-যুদ্ধে তাদের পছন্দের রাজ্যগুলির প্রতি পক্ষপাতিত্ব করছে এবং একটি নির্দিষ্ট স্ক্রিপ্ট মেনে কাজ করছে। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, ‘কেউ আমাদের পরামর্শ দিতেও বলছে না।
যদিও উম্পুনের পর রাজ্যে পরিদর্শনে এসে করোনা মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। কিন্তু এবারের বৈঠকেও মুখ্যমন্ত্রীকে জায়গা না দেওয়ায় স্বাভাবিক কারণেই বাংলাকে ‘বঞ্চনার’ অভিযোগ উঠছে।