“রাজ্যের বকেয়া ৯৭ হাজার কোটি টাকার মধ্যে আমাকে ৫০ হাজার কোটি টাকা দিন। পরের দিন পেট্রোপণ্যে ১০ হাজার কোটি টাকা ছাড় দিয়ে দেব। আপনার রাজ্য ৫ হাজার দিয়েছে, আমি ১০ হাজার কোটি দেব।” পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে সপাট জবাব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বুধবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, পেট্রোপণ্যে রাজ্যের থেকে ২৫ শতাংশ বেশি কর নেয় কেন্দ্র সরকার। পেট্রোপণ্যে ৭৫ শতাংশ কর নেয় কেন্দ্র। ”তাহলে রাজ্য সরকার কীভাবে চলবে? কী করে চালাব?” প্রশ্ন মমতার।
বুধবার সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে ডাকা কোভিড সংক্রান্ত বৈঠকে পেট্রল-ডিজেলের মূল্য নিয়ে রাজ্যকে খোঁচা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলা-সহ বিরোধী দল শাসিত রাজ্যগুলিকে নতুন করে পেট্রোপণ্যের দাম কমাতে অনুরোধ করেছেন মোদি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর সেই বক্তব্যের পর রাজ্য সরকারগুলি নিজেদের অবস্থান জানানোর সুযোগ পায়নি। যা নিয়ে এদিন ফুঁসে উঠেছেন মমতা। তাঁর বক্তব্য, “প্রধানমন্ত্রী এদিন একতরফা বলেছেন। মুখ্যমন্ত্রীদের বলতে দেওয়া হয়নি। আমার অনুরোধ ছিল করোনার বৈঠকে এইসব নিয়ে আলোচনা করবেন না। কিন্তু এটা ওদের এজেন্ডা। আমাদের বলতে দেওয়া হয়নি।”
তারপরই প্রধানমন্ত্রী অভিযোগের জবাব দিয়েছেন মমতা। মনে করিয়ে দিয়েছেন, “৩ বছর ধরে আমরাও পেট্রল-ডিজেলে ১ টাকা করে ছাড় দিয়েছি। দেড় হাজার কোটি টাকা চলে গিয়েছে। আমরা ৯৭ হাজার কোটি টাকা বকেয়া পাই। সেটা আমাদের দিয়ে দিন, আমরা দেখুন পরের দিন ৩ হাজার কোটি টাকা ছাড় দিয়ে দেব।” পরিসংখ্যান তুলে ধরে এদিন মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন, “২০১৪ সালে কেন্দ্র সরকার ক্ষমতায় আসার পর পেট্রল-ডিজেলে ১৭ লক্ষ ৩১ হাজার ২৪২ কোটি টাকা কর নিয়েছে মোদি সরকার। আজ আপনি রাজ্যের উপর দায় চাপাচ্ছেন? আপনি নিজে সাধারণ মানুষের পকেট কেটেছেন।এটা গণতন্ত্রে এক ধরনের তোলাবাজি। গণতন্ত্রকে বুলডোজ করবেন না।” মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, “আপনি কখনও কখনও বলেন রাজ্যের এত ঋণ। কত ঋণ আছে? আমরা বহু ঋণ শোধ করে দিয়েছি। কিন্তু কেন্দ্র সরকার কত ঋণ নিয়েছে। রাজ্য সরকারের যদি ৩-৪ লক্ষ কোটি টাকা থেকে থাকে, তাহলে কেন্দ্র সরকারের ১৫০ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ আছে। সেই ঋণ কী করে শোধ করবেন।”
মমতার অভিযোগ, রাজ্য দখল করতে না পেরে বিমাতৃসুলভ আচরণ করছে কেন্দ্র। তাঁর তোপ, “নিজেরা এত টাকা রোজগার করবেন পেট্রল-ডিজেলের দাম বাড়িয়ে, কী এমন দাম কমিয়েছেন নভেম্বরে? সবটাই তো লোক দেখানো, কত সেস বসিয়েছেন? কৃষি সেস, রোড সেস, শিল্প সেস, সাজুগুজু সেস? সেই টাকা তো রাজ্য সরকার পায় না। আপনি সব টাকা তুলে নিয়ে চলে যাবেন, আমাদের টাকাও দেবেন না, আর ভোট এলেই আমাদের নামে দোষ দেবেন। আমাদের নামে দিয়ে দোষ, সাধু-সেজেছে নন্দ ঘোষ!”
Be the first to comment