পিয়ালি আচার্য,
১লা ফেব্রুয়ারি রাজ্য বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের সূত্রপাত করেন রাজ্যপাল। তারপর কেন্দ্রীয় সরকারের পেশ করা বাজেট নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে এই বাজেটকে মূল্যহীন বলে কটাক্ষ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন রাজ্য বিধানসভায় সাংবাদিক সম্মেলন করেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমাদের মনে হয় এটি একটি এক্সপায়ারি বাজেট। এটি একটি বেপরোয়া বাজেট। এই বাজেট কার্যকরী হবে না। এই সরকারের সময়সীমা আর মাত্র একমাস। নির্বাচনের পর নতুন সরকার নতুন বাজেট পেশ করবে। আমি কোনও অর্থনীতিবিদ নই, কিন্তু আমার কিছু বাস্তব অভিজ্ঞতা আছে। কেউ কি জানে না ভারতের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কি? দেশে এখন অর্থনৈতিক জরুরী অবস্থা চলছে। কোথা থেকে টাকা আসবে এই বাজেটের? কি করে ম্যানেজ হবে? কোনও প্রকল্প ঘোষণা করার আগে পর্যাপ্ত টাকার জোগান রাখতে হয়। আমরা আমাদের রাজ্যের কোনও প্রকল্প ঘোষণা করার আগেও এই কাজটা করি। ওনারা কোথা থেকে টাকা জোগাড় করবেন?
মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় সরকারের এই হতাশাপূর্ণ বাজেটের বিষয়ে বলেন, এই বাজেট পেশ করার কোনও নৈতিক অথরিটি নেই এই সরকারের। সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পর এই বাজেটের কোনও মূল্য থাকবে? এটি একটি মূল্যহীন বাজেট। গত সাড়ে চার বছরে কেন এই সরকার কৃষকদের জন্য একটাও উদ্যোগ নেয়নি?”
তিনি আরও বলেন, আজ যেসব প্রকল্প ঘোষণা হলো সেগুলো আমরা আগেই চালু করেছি। এটা আমাদের কৃষক বন্ধু প্রকল্পের একটা ফটোকপি। এটি মানুষের সঙ্গে ধোঁকা। এই বাজেট মানুষকে বোকা বানানোর জন্য বিজেপির ইস্তাহার। কেউ মারা যাওয়ার পর ডাক্তার আসছে। এই বাজেট পুরো মানুষকে বোকা বানানোর জন্য।
কেন্দ্রীয় সরকারের প্রচারমূলক রাজনীতির বিরুদ্ধে তিনি বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প যথেষ্ট সফল। আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প থেকে বেরিয়ে এসেছি কারণ মোদী নিজের প্রচার করছে এই প্রকল্পের মাধ্যমে। রাজ্য সরকার খরচ করলেও কেন্দ্রীয় সরকার সমস্ত প্রকল্প প্রচার করছে নিজেদের ছবি দিয়ে। রাজ্য সরকারের থেকে আদায় করা করের বিপুল অংশ নিয়ে যায় কেন্দ্র এবং বিনিময়ে ছিটেফোঁটা ফেরত দেয়। পরের বার থেকে আমরাই সবটা দিয়ে দেব।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন তপশীলী, জাতি, উপজাতি, গরীব সবক্ষেত্রেই বরাদ্দ কমিয়েছে। রাজ্য, কেন্দ্র সব জায়গাতেই মানুষের নির্বাচনের ভিত্তিতে সরকার গঠন হয়, কিন্তু এই সরকার একটা সমান্তরাল সরকার চালাচ্ছে। আমরা যা কথা দিই তাই কথা রাখি, মানুষের জন্য করি। আর গতবার ওদের প্রতিশ্রুতি ছিল ১৫ লক্ষ এবার এই বাজেট। আর সবটাই আমাদের নকল, টুকলি।
কর্মসংস্থানের বিষয়ে তিনি বলেন, গত এক বছরে ২ কোটি মানুষ বেকার হয়েছে। এখন আবার বাজেটে দক্ষতা উন্নয়ন খাতে ১৩.৪ শতাংশ বরাদ্দ কমানো হয়েছে। এটি শো-অফ বাজেট। ১০০ দিনের কাজে কোনও অতিরিক্ত টাকা দেওয়া হয়নি। সংশোধিত হিসেবের থেকেও কম টাকা দেওয়া হয়েছে। মানুষ তাঁদের প্রাপ্য টাকা পাচ্ছে না।
তিনি বলেন, নির্বাচন আসলেই নরেন্দ্র মোদী অফিসারদের ডেকে বলেন আরে কিছু তো করুন। আমি বলি লড়াইটা রাজনৈতিকভাবে লড়ুন এভাবে ধমকে চমকে কেন? সাংবাদিকদের আরও এক প্রশ্নের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন আমাদের নতুন সরকারের কমন অ্যাজেন্ডা আছে তা তৈরী হলে নিশ্চয় জানাবো। নির্বাচনের আগেই আমরা কমন অ্যাজেন্ডায় যাব। তিনি এও জানান ৪ তারিখ দিল্লীতে মহাজোটের বৈঠকে ডেরেক ও’ব্রায়েন উপস্থিত থাকবেন।
Be the first to comment