“দিল্লির কুর্সি চাই না, জনতার ভরসা আর ভালবাসা চাই”- মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

Spread the love

উনিশের ভোট দোরগোড়ায়। অনেকেই বলেন, হিন্দিভাষী ব্যবসায়ীরা বিজেপি-র স্বাভাবিক ভোট ব্যাঙ্ক। আর ভোটের কয়েক মাস আগে বাংলায় বসবাস করা হিন্দিভাষী ব্যবসায়ীদের মধ্যে গেরুয়াবাহিনীর প্রভাব ঠেকাতে নভেম্বর থেকেই ওয়ার্ম আপ শুরু করে দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সোমবার ঝাড়গ্রাম দিয়ে জঙ্গলমহল সফর শুরু করেছিলেন মমতা। মঙ্গলবার গিয়েছিলেন পুরুলিয়ায়। প্রশাসনিক বৈঠক করার পর মুখ্যমন্ত্রী শিমুলিয়ার ব্যাটারি ময়দানে হিন্দিভাষী সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। স্বভাবসিদ্ধ হিন্দিতে গোটা বক্তৃতার শেষ পর্যায়ে পষ্টাপষ্টি জানিয়ে দেন, “দিল্লিতে বদল হলেই আপনাদের মুখে হাসি আর হাসি। রোশনি আর রোশনি।” সেই সঙ্গে এ-ও বলেন, “দিল্লির কুর্সি চাই না। জনতার ভরসা আর ভালবাসা চাই।”
নোটবন্দির পর দেশে ব্যবসাপাতি লাটে উঠেছে বলে বিজেপি-র বিরুদ্ধে তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে বলেন, “দেশে এখন শুধু ঝুটো আর বড় বড় ভাষণ। দেশের নেতা হবেন এমন, যাঁকে জনতা ভালবাসবে। আর এখন এমন নেতা এসেছেন, যাঁকে দেখে জনতা ভয় পাচ্ছে।” বিজেপির বিরুদ্ধে বিভাজনের রাজনীতির অভিযোগ তুলে মমতা এ দিন বলেন, “সাচ্চা হিন্দুস্থান কাকে বলে সেটা ওদের থেকে শিখব না।” মানব শরীরের সঙ্গে দেশের তুলনা করে মমতা বলেন, “শরীরে যেমন অনেক অঙ্গ থাকে তেমন দেশেও অনেক রাজ্য, অনেক ধর্ম, অনেক ভাষা। কিন্তু আসলে দেশটা এক। আমার মাথায় পাঞ্জাব, কিডনিতে রাজস্থান, লিভারে তামিলনাড়ু। এক চোখে ঝাড়খণ্ড, এক চোখে বিহার। কিন্তু শরীর একটাই।”

সপ্তাহ দুয়েক আগে পোস্তায় জগদ্ধাত্রী পুজোর উদ্বোধনী ভাষণে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, হিন্দিভাষীদের কাছে আরও বেশি করে পৌঁছতে চান। এ দিন তা একেবারে স্পষ্ট করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই অনুষ্ঠানে মোদীর রাজ্য গুজরাটে বিহারী খেদানো নিয়ে তীব্র ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন দিদিমণি। বলেছিলেন, “এখানে তো কত বাইরের রাজ্যের লোক থাকে। কেউ একটা অন্যায় করলে নিশ্চয়ই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হবে। তাই বলে সবাইকে চলে যেতে হবে!” কয়েক মাস আগে শিশু কন্যা ধর্ষণের ঘটনায় রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল গুজরাট। ঠাকুর সেনাদের আগ্রাসী আস্ফালনে আতঙ্কিত হয়ে রাজ্য ছেড়েছিলেন বিহার, উত্তর প্রদেশের বহু মানুষ। সেই সময়ো প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন মমতা। এ দিন হিন্দিভাষীদের উদ্দেশে ব্যাটারি ময়দানের সভা থেকে মমতা বলেন, “আপনারা পুরুলিয়া, আসানসোল, শিলিগুড়ি, কলকাতা যেখানেই থাকুন এ সবই আপনাদের হৃদয়ের জায়গা। এটা বাংলা। কেউ আপনাসের সরাতে পারবে নইডি, সিবিআই-এর মত কেন্দ্রীয় এজেন্সি গুলিকে বিজেপি রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করতে চাইছে এই অভিযোগ মমতার নতুন নয়। এ দিন হিন্দিভাষী সম্মেলনে মমতা বলেন, “ব্যবসায়ীরা ভয়ে ভয়ে রয়েছেন। এই বুঝি সিবিআই এল! এই বুঝি ইডি এল! এই বুঝি ইনকাম ট্যাক্স খেয়ে গেল!”
এমনিতেই গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে পুরুলিয়ার বেশ কয়েকটি ব্লকে শাসক দলের ফলাফল খারাপ হয়েছে। সেই জায়গায় মাথা চাড়া দিয়েছি বিজেপি। বলরামপুরে দুই বিজেপি কর্মী ত্রিলোচন মাহাতো এবং দুলাল কুমারের রহস্য মৃত্যুর পর এই জেলায় এসে সভাও করে গিয়েছেন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*