সোমবার নন্দীগ্রামের পর মঙ্গলবার পুরুলিয়ার হুটমুড়ায় আবারও মুখ্যমন্ত্রীর জনসভায় বিক্ষোভ। একগুচ্ছ দাবিদাওয়া নিয়ে মমতার সভা চলাকালীন এদিন বিক্ষোভে সামিল হন প্রশিক্ষিত স্বনির্ভরগোষ্ঠীর সদস্যরা। প্ল্যাকার্ড দেখিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে কিছু জানাতে চান তাঁরা।
কিন্তু এদিন সভা চলাকালীন এহেন বিক্ষোভে রীতিমত মেজাজ হারান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথমে তাঁদের ধমকে চুপ করানোর চেষ্টা করেন তিনি। যদিও পরে নমনীয় মনোভাবে গ্রহণ করেন তাঁদের দাবিসনদ। তবে সভা চলাকালীন বিক্ষোভকারীদের এহেন কার্যকলাপে ক্ষুব্ধ হন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন পুরুলিয়ায় জনসভা করতে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সভাস্থলে দর্শকের আসনে হাজির ছিলেন প্রশিক্ষিত স্বনির্ভরগোষ্ঠীর সদস্যরা। স্থায়ীকরণ সহ কয়েকটি দাবিদাওয়া নিয়ে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণের মাঝেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। স্বনির্ভার গোষ্ঠীর প্রশিক্ষকরা চুক্তির ভিত্তিতেই কাজ করেন।
কাজ হলে টাকা- না হলে বেতন নেই। এদিন তাঁরা নির্দিষ্ট বেতন এবং স্থায়ীকরণের দাবিতেই সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য। বিক্ষোভকারীরা বেশ কিছু ব্যানার-প্লার্কাডও দেখাতে থাকেন। কিন্তু ভাষণের মাঝেই এই বিক্ষোভে মেজাজ হারিয়ে ফেলেন মুখ্যমন্ত্রী।
ভাষণ থামিয়ে তিনি বলেন, বিজেপিই পরিকল্পনামাফিক তাঁর সভায় অশান্তি করতে বহু মানুষকে পাঠাচ্ছে। সাত আটজন মিলে মিটিংটা নষ্ট করে দিচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে বিজেপির সভাতেও বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে লোক পাঠাব, সেটা হলে ভালো হবে?
এমনকী বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের হুঁশিয়ারিও দেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে শেষমেশ কিছুক্ষণ পরই নিজের ভাষণে কিছুটা নমনীয় হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সভামঞ্চ থেকেই তিনি দলীয় নেতাদের বিক্ষোভকারীদের থেকে দাবিসনদ সংগ্রহের নির্দেশ দেন।
পরে মমতা জানিয়ে দেন, তাঁদের দাবিদাওয়া দেখা হবে। আশ্বাস দেন, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর প্রশিক্ষকদের অবসরের বয়স ৬০ বছর করে দেবেন এবং অবসরকালীন কিছু সুযোগসুবিধা দেওয়ারও চেষ্টা করবেন। কিন্তু স্থায়ীকরণের প্রতিশ্রুতি দিতে পারবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী এই প্রসঙ্গে সাফাই দিয়েছেন, এটা বাম আমল থেকেই চলে আসছে। অন্যদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর এহেন মন্তব্যের জবাবে মুকুল রায় বলেন, একজন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তিনি। তাঁর হাতে পুলিশ-প্রশাসন। বিজেপির লোক হলে গ্রেফতার করুন না! এমনিতেই একগুচ্ছ মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে বিজেপি কর্মীদের।
অন্যদিকে, সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, কেউ কিছু অভিযোগ জানাতে গেলেই তাঁকে বিজেপি বলে আখ্যা দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এটা কি ঠিক? গোটা বাংলার মানুষের কিছু না কিছু অভিযোগ আছে। তাহলে কি সবাই বিজেপি? প্রশ্ন তোলেন লকেট।
উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার নন্দীগ্রামে সভা ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেখানেও বিক্ষোভ হয়েছিল। বারবার একই ঘটনায় ক্ষুব্ধ তিনি!
Be the first to comment