নবান্ন দখলের লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে জঙ্গলমহল। লোকসভা নির্বাচনের ঘাটতি মেটাতে তাই ভাঙা পায়েই জঙ্গলমহল চষে বেড়াচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর বৃহস্পতিবার জঙ্গলমহলের একপ্রান্ত পুরুলিয়ায় যখন মমতা ও তৃণমূল কংগ্রেসকে তুলোধনা করছেন নরেন্দ্র মোদী, তখন পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা থেকে মোদী ও তাঁর দলকে ‘সাপের’ সঙ্গে তুলনা করছেন মমতা।
‘ঘরের দুয়ারে সাপ লুকিয়ে থাকে, বাঘ লুকিয়ে থাকে। সাপকে ঢুকতে দেওয়া যাবে না, বাঘকেও ঢুকতে দেওয়া যাবে না।’ তবে এবারের ভোটে মমতা নিশানা করেছেন মহিলা ভোটকে। বাংলার মহিলা ভোটারদের বিপুল সংখ্যাকে টার্গেট করেই এগোচ্ছেন তৃণমূল নেত্রী। প্রতিটি সভায় তুলে ধরেছেন বিজেপির নারী ‘বিরোধী’ রূপ।
এদিনও গড়বেতার সভা থেকে মমতা বলেন, ‘মা-বোনেরা আপনাদের বলব, আপনারা ঘরেও কাজ করেন, বাইরের কাজও করেন। লুঠেরা বাহিনী এলে হাতা-খুন্তি নিয়ে তেড়ে যাবেন। তবে, আমরা বদলার বদলে বদলা চাই না, আমার দাঙ্গা চাই না। কিন্তু নিজেদের সবকিছু লুঠ করতে দেবেন না।’
মমতার সংযোজন, ‘কৃষকদের আজ সমূহ বিপদ। আপনি শস্য ফলাবেন, অন্য লোক নিয়ে চলে যাবেন। আমরা কৃষক বন্ধু প্রকল্পে ২ লক্ষ টাকা করে দিই। আমরা ছাত্রযুবদের পাশে আছি। মনে রাখবেন, এটা রাজনৈতিক যুদ্ধ। এই যুদ্ধে বিজেপি-সিপিএম-কংগ্রেসকে পরাস্ত করতে হবে, আর মানুষকে জয়ী করতে হবে।’
নরেন্দ্র মোদী যখন পুরুলিয়ায় দাঁড়িয়ে উন্নয়নের জোয়ার বইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, তখন গড়বেতা থেকে মমতা কটাক্ষ করছেন, ‘আমফানের সময় কোথায় ছিল বিজেপি, কোথায় ছিলেন নরেন্দ্র মোদী, ভোটের সময়ই টাকা নিয়ে বেরিয়ে পড়েন।’ জনতার উদ্দেশে তাঁর প্রতিশ্রুতি, ‘আমাদের সরকার থাকলে বিনা পয়সায় রেশন পাবেন আপনারা। ভোট মিটে যাওয়ার পর বাড়ি বাড়ি রেশন পৌঁছে দেব। আমরা দুয়ারে সরকার। দুয়ারে রেশন পৌঁছে দেব, কোনও চিন্তা করবেন না।’
বুধবারই বামপন্থী ‘বন্ধুদের’ তৃণমূলকেই ভোট দেওয়ার কথা বলেছিলেন মমতা। আর এদিন সিপিএমকে তুলোধনা করে তিনি বলেন, ‘লাল চোখ দেখাবেন না। সিপিএম-কে অনেক দেখেছি ৷ সুশান্ত ঘোষ, তপন-শুকুরকে দেখেছি ৷ ওই পচা সিপিএম, আর এখন পচা বিজেপি। জোচ্চুরির দলকে জব্দ করতে হলে আমাদের ভোট দেবেন।’
তবে, আগামী নির্বাচনে তিনি যে জিতছেনই, সেই আত্মবিশ্বাস ধরা পড়েছে তাঁর গলায়। গড়বেতাবাসীর উদ্দেশে বলেছেন, ‘এখন ভাঙা নিয়ে এসেছি, আর ২ মে পর, আমার পা ভালো থাকলে আবার আসব। আপনাদের পাশে কেউ থাকবে না। একমাত্র আমি থাকব।’
Be the first to comment