বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে ভুটানের রাজার উপস্থিতি অনিশ্চয়তা নিয়ে দিল্লিকে নিশানা মমতার

Spread the love

রোজদিন ডেস্ক, কলকাতা:- বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের আগে কি প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার? মঙ্গলবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যে উঠে আসছে সেই প্রশ্ন। ভুটানের রাজার আসা নিয়ে অনিশ্চয়তা প্রসঙ্গে মমতার মুখে শোনা গেল দিল্লির কথা।

প্রসঙ্গত, এদিন বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে ভুটানের রাজার উপস্থিতি নিয়ে একটা অনিশ্চয়তার ইঙ্গিত দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এই অনিশ্চয়তার পেছনে দিল্লির যোগ থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি। যদিও পরমুহূর্তে তিনি এও বলেছেন, যেহেতু ভুটানের রাজা এখনও বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে আসা বা না আসা নিয়ে কোনও স্পষ্ট তথ্য জানাননি, তাই এই বিষয়টি নিয়ে তিনি আরও কিছুটা অপেক্ষা করতে চান।
রাত পোহালেই রাজ্যে বসতে চলেছে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের মেগা আসর। রাজ্যের পাশাপাশি গোটা দেশের নজর এই মুহূর্তে সেই দিকে। বছর ঘুরলেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে এবারের বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ এবারের বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন থেকে রাজ্যে যে বিনিয়োগ প্রস্তাব আসবে, তার দিকে নজর থাকবে গোটা বাংলার।
মঙ্গলবার বিশ্ব বাংলা কনভেনশন সেন্টারে চা-চক্রে যোগ দেওয়ার আগে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, এখনও পর্যন্ত ২২টা দেশের প্রতিনিধি এসে পৌঁছেছেন। তিনি জানিয়েছেন, এবার বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে প্রায় ৪০টা দেশ উপস্থিত থাকছে। এর মধ্যে ২০টি হল পার্টনার কান্ট্রি। প্রায় ২০০-রও বেশি বিদেশি প্রতিনিধি এখানে যোগদান করবেন।
বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের অতিথি তালিকা নিয়ে বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এখনও পর্যন্ত যা ঠিক আছে, জানি না দিল্লির কিছু প্রবলেম আছে কি না, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী অক্টোবর মাসেই এই সম্মেলনে যোগ দেওয়ার বিষয়ে আমাদের নিশ্চয়তা দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন স্পষ্ট ভাবে জানা যাচ্ছে না তিনি আসছেন কি না। রিলায়েন্স কর্ণধার মুকেশ আম্বানির এই বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে আসার কথা, আসবেন জিন্দাল গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান সজ্জন জিন্দাল। এছাড়া বাংলার শিল্পমহলের সকলেই থাকবেন।”
এছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, আগামিকাল বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে প্রায় ২৫টি বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত উপস্থিত থাকবেন। এদিন ভুটানের রাজার উপস্থিতি নিয়ে অনিশ্চয়তার বিষয়টি তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই। তিনি বলেন, “ভুটানের প্রধানমন্ত্রী আমাকে আসার বিষয়ে আগেই নিশ্চয়তা দিয়েছিলেন। আমার কাছে এমন খবর আসছে যে, আগামিকাল সকালে তিনি আসতে পারেন। তবে কোনও কোনও মহল থেকে এমন খবর পাচ্ছি যে, দিল্লির সঙ্গে একটা বিষয় হচ্ছে, তবে আমি চাই তিনি আসুন। কারণ ভুলে গেলে চলবে না, ভুটান হল বাংলার বর্ডার। আমাদের প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় রাখা উচিত।”
এদিন অনিশ্চয়তার কথা বললেও সরাসরি সাংবাদিকদের প্রশ্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এটাও জানান, এখন বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য তিনি করতে চান না। যতক্ষণ না আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যানের চিঠি হাতে পাচ্ছেন, এই বিষয়ে মন্তব্য করা সঠিক নয় বলে মনে করছেন তিনি। তবে মুখ্যমন্ত্রী যাই বলুন, রাজনৈতিক মহলের একাংশ বলছে, মুখ্যমন্ত্রীর এদিনের এই বক্তব্য থেকে আরও একবার বাণিজ্য সম্মেলনের মুখেই কেন্দ্র ও রাজ্য সংঘাতের ছবি প্রকাশ্যে এসে গেল।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*